নড়াইলের ঐতিহ্যবাহী গোয়ালবাথান মসজিদ

নড়াইলের প্রায় ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী গোয়ালবাথান জামে মসজিদ চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের গোয়ালবাথান গ্রামে অবস্থিত। এটি ছিল তৎকালীন যশোর জেলার মধ্যে সর্বপ্রথম মসজিদ।
ইতিহাস
মসজিদটি তৈরির সঠিক সময়কাল বলতে পারেন না কেউ। তবে স্থানীয়দের ধারণা, মসজিদটি প্রায় ৫০০ বছরের পুরাতন। স্থানীয়দের তথ্যমতে,মোঘল আমলে মুন্সি হয়বৎউল্লাহ নামের এক বুজুর্গ ব্যক্তি কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে জঙ্গলের মধ্যে এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন।
কথিত আছে, এলাকার লোকেরা হঠাৎ গড়ে ওঠা এই মসজিদ এবং বিশাল আকৃতির পুকুর দেখে অবাক হয়ে যান। তাদের ধারণা বিশাল এই পুকুর খনন করা এবং মসজিদটি এক রাতের মধ্যেই নির্মিত হয়েছে। জ্বিন দ্বারা বিশাল এই কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন হয়েছিলো বলে এলাকায় এটিকে জ্বিনের মসজিদ নামেও ডাকা হয়। এলাকার মুসল্লিরা বিশ্বাস করেন সে সময় জ্বিনেরা এখানে নামাজ পড়তো।

এক সময়ে নড়াইলে এবং আশেপাশে কোনো মসজিদ না থাকায় পাঁচ দিনের পায়ে হাঁটা পথের দুরুত্ব অতিক্রম করে মুসল্লিরা শুক্রবারে জুমার নামাজ আদায় করতে আসতেন এখানে। প্রতি জুমার পর একটি করে গরু জবাই করে আনন্দমুখর পরিবেশে গণভোজনের আয়োজন ছিল এখানে। তারা এখানে এসে খাওয়া দাওয়া করতেন এবং মুন্সি হয়বৎউল্লাহ সাহেবের আশ্রয়ে থেকে আবার চলে যেতেন। যেটি ছিল সম্পূর্ণ জেলার মাঝে এক অনন্য ঘটনা।
বৈশিষ্ট্য
৫ একর ৭০ শতক জায়গার উপর নির্মিত মসজিদটি দৈর্ঘ্যে ৫০ ফুট এবং প্রস্থে ৩৫ ফুট। ছোট ছোট ইট আর চুন সুরকীর গাথুনিতে এক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ, উপরে চারটি ছোট মিনার রয়েছে, আছে বজ্রপাত নিরোধক লোহার দন্ড। কোন পিলার নাই, কোন রড়ের ব্যবহার ছাড়াই মসজিদের গম্বুজটি অপূর্ব স্থাপত্য নির্মাণ শৈলী হয়ে আজো দাঁড়িয়ে আছে।

সুবিধা-অসুবিধা
সুপেয় পানির জন্য মসজিদ সংলগ্ন বিশাল আকৃতির পুকুর রয়েছে। তবে নেই উপযুক্ত ওযুখানা ও বাথরুম। প্রধান সড়ক থেকে মসজিদ পর্যন্ত ৫০ মিটার মাটির রাস্তা রয়েছে, যা বর্ষাকালে কাদামক্ত হয়ে ওঠে। এতে মুসল্লিদের মসজিদে যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটে। এ ছাড়াও ইমামের থাকার জন্যও নেই নির্দিষ্ট কোনো মসজিদের ইমাম।