ঝাকুয়াটারী জামে মসজিদ
যেখানে দুই দেশের মানুষ নামাজ পড়ে

বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের নাগরিকরা একটি মসজিদে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। মসজিদটিকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মানুষের মধ্যে গড়ে উঠেছে সম্প্রীতির সেতুবন্ধন। বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের দক্ষিণ বাঁশজানী ও ভারতের কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার ছোট গারালঝোড়া এলাকার ঝাকুয়াটারী গ্রামের নামানুসারে মসজিদের নামকরণ করা হয়েছে ‘দক্ষিণ বাঁশজানী ঝাকুয়াটারী জামে মসজিদ’। দুই দেশের দুই গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবারের মানুষ এই মসজিদে নামাজ পড়েন।
আরও পড়ুন : কালের সাক্ষী অভয়নগরের খানজাহান আলী মসজিদ
মসজিদটি কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের দক্ষিণ বাঁশজানী গ্রামের সীমান্ত পিলার ৯৭৮ এর ৯ নম্বর সাব পিলারের নিকট সীমান্তের শূন্য রেখায় অবস্থিত। ভূরুঙ্গামারী উপজেলা সদর থেকে মসজিদটির দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, প্রায় ২০০ বছর আগে বৃটিশ শাসনামলে মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। আজানের ধ্বনি শুনে মসজিদের উত্তর দিক থেকে ভারতীয়রা নামাজ পড়তে আসেন। মসজিদের দক্ষিণ দিক থেকে নামাজ পড়তে যান বাংলাদেশিরা। দুই দেশের মানুষ এক মসজিদে নামাজ পড়ে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে লোকজন মসজিদটি দেখতে আসেন। গ্রামের আর ১০টি সাধারণ মসজিদের মতো দেখতে হলেও দক্ষিণ বাঁশজানী ঝাকুয়াটারী জামে মসজিদটি দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে।
মসজিদের ইমাম মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, প্রায় ৫০ বছর যাবৎ এই মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করছি। বাংলাদেশ ও ভারতের মুসল্লিরা একত্রে এই মসজিদে নামাজ আদায় করেন।
আরও পড়ুন : দৃষ্টিনন্দন ফটিকছড়ির শাহী জামে মসজিদ
মুসল্লিরা বলেন, মসজিদে মুসল্লিদের জায়গা না হওয়ায় মসজিদ কর্তৃপক্ষ ১৫০০ বর্গফুটের একটি পাকা ভবন নির্মাণ শুরু করেছে। সীমান্ত আইনের জটিলতা আর ভারতীয় বিএসএফের বাঁধায় মসজিদের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে মসজিদে নামাজ পড়তে আসা দুই দেশের মুসল্লিদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে দ্রুত মসজিদের ভবন নির্মাণে আইনি জটিলতা নিরসনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।