২০৯ কোটি টাকা লেনদেনে ফু-ওয়াং সিরামিক শীর্ষে
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ‘বি’ ক্যাটাগরির ফু-ওয়াং সিরামিক গত সপ্তাহে (রোববার থেকে বৃহস্পতিবার) ২০৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের পাঁচ দশমিক ১৫ শতাংশ একাই করেছে কোম্পানিটি। এতে সপ্তাহটিতে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ডিএসইতে গত বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) ফু-ওয়াং সিরামিকের শেয়ারের সমাপনী দর দাঁড়ায় ৩০ টাকা ৬০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহে বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ২৭ টাকা ৮০ পয়সা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে দুই টাকা ৮০ টাকা বা ১০ দশমিক শূন্য সাত শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির ২০৮ কোটি ৮৪ লাখ ৯০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের পাঁচ দশমিক ১৫ শতাংশ। এ সময় ছয় কোটি ৯৫ লাখ ৫৫ হাজার ৭৯২টি শেয়ারের কেনাবেচা হয়। সপ্তাহটিতে মোট ৪১১টি কোম্পানি চার হাজার ৫৩ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে।
তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২০২৪) দ্বিতীয় প্রান্তিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর) আর্থিক প্রতিবেদনে ফু-ওয়াং সিরামিকের শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয় পাঁচ পয়সা। আগের অর্থবছরের (২০২২-২০২৩) একই সময়ে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি মুনাফা ছিল সাত পয়সা। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস বা দুই প্রান্তিকে (জুলাই-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি মুনাফা হয় ১৪ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি মুনাফা ছিল ১২ পয়সা। আলোচিত দুই প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি নগদ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয় ৩৩ পয়সা। আগের অর্থবছরের (২০২২-২০২৩) একই সময়ে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি নগদ প্রবাহ ছিল ২৯ পয়সা। গত ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা চার পয়সা। আগের অর্থবছরের ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছিল ১১ টাকা ৯১ পয়সা।
২০২২-২০২৩ অর্থবছরের সমাপ্ত আর্থিক প্রতিবেদন (জুলাই-জুন) যাচাই বাছাই করে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ২ শতাংশ নগদ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। আলোচ্য অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছিল ২৬ পয়সা। আগের ২০২১-২০২২ অর্থবছরে (জুলাই-জুন) শেয়ার প্রতি মুনাফা ছিল ২৩ পয়সা। সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ার প্রতি নগদ প্রবাহ হয়েছিল নেগেটিভ পাঁচ টাকা ১৫ পয়সা। আগের অর্থবছরে শেয়ার প্রতি নগদ প্রবাহ ছিল নেগেটিভ তিন টাকা ২৭ পয়সা। গত ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৯১ পয়সা। আগের অর্থবছরে শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছিল ১১ টাকা ৭৮ পয়সা।
১৯৯৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ফু-ওয়াং সিরামিক। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন পাঁচশত কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ১৩৬ কোটি ২৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা। শেয়ার সংখ্যা ১৩ কোটি ৬২ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩টি। রিজার্ভে রয়েছে ১৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকরা ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেছে। এ ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক পরিচালকরা তিন দশমিক ৬৩ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারী দশমিক ৪০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ৬৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেছে।
গেল সপ্তায় লেনদেন তালিকায় শীর্ষ দ্বিতীয়তে এসেছে ‘বি’ ক্যাটাগরির সেন্ট্রাল ফার্মার শেয়ার। কোম্পানিটি একাই ১৮৯ কোটি ৬৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে। যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ। ছয় কোটি ১২ লাখ ৫৪ হাজার ৯৯টি শেয়ারের কেনাবেচা হয়। গত বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) শেয়ারটির সমাপনী দর দাঁড়ায় ২৬ টাকা ৮০ পয়সা। যা আগের সপ্তাহে বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ৩৩ টাকা ৩০ পয়সা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে শেয়ারটির দর কমেছে ছয় টাকা ৫০ টাকা বা ১৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। শীর্ষ তৃতীয়তে এসেছে ‘বি’ ক্যাটাগরির মুন্নু ফেব্রিকসের শেয়ার। কোম্পানিটি একাই ৯৩ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে। যা মোট লেনদেনের দুই দশমিক ৩১ শতাংশ। দুই কোটি ৯৯ লাখ ১১ হাজার ১১টি শেয়ারের কেনাবেচা হয়। গত বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) শেয়ারটির সমাপনী দর দাঁড়ায় ২৭ টাকা ৭০ পয়সা। যা আগের সপ্তাহে বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ৩১ টাকা ৯০ পয়সা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে শেয়ারটির দর কমেছে চার টাকা ২০ টাকা বা ১৩ দশমিক ১৭ শতাংশ।
তালিকায় অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে আফতাব অটোমোবাইলসের (‘এ’ ক্যাটাগরি) ৮৯ কোটি ১৬ লাখ টাকা, ফরচুন সুজের (‘বি’ ক্যাটাগরি) ৮৯ লাখ টাকা, বিডি থাইয়ের (‘বি’ ক্যাটাগরি) ৮৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা, বেস্ট হোল্ডিংসের (‘এন’ ক্যাটাগরি) ৮৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, ফু-ওয়াং ফুডের (‘বি’ ক্যাটাগরি) ৭৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের (‘এ’ ক্যাটাগরি) ৭৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা এবং ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর (‘এ’ ক্যাটাগরি) ৭২ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।