বাফুফের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ
টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামের ব্যবহার নিয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) স্বেচ্ছাচারিতা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশনের সভাপতি লে. জেনারেল (অব.) মো. মাইনুল ইসলাম।
বুধবার ফেডারেশন কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরী এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, কোনোরকম নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই বাফুফে আরচারি ফেডারেশনের অনুকুলে বরাদ্ধকৃত স্টেডিয়ামটি নিয়ন্ত্রনে নেওয়ার চেস্টা করছে।
মাইনুল বলেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের আন্তরিক সহযোগিতায় টঙ্গীর স্টেডিয়ামটি আরচারি ফেডারেশনের প্রশিক্ষন ও প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য তাদের অনুকুলে বরাদ্ধ দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। বরাদ্ধ পাওয়ার পর থেকে স্টেডিয়ামটির রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে নিরাপত্তায় নিয়োজিত সব কর্মকর্তাকর্মচারী আরচারি ফেডারশনের বেতভোগী হিসেবে কর্মরত রয়েছে। সেখানে এনএসসির কোনো ভেন্যু ম্যানেজার বা কোনো কর্মচারী নেই। আরচারির কর্মীরাই স্টেডিয়ামের রক্ষণাবেক্ষণ, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ এবং পানি সরবরাহ থেকে সব কিছু করে আসছে। এ জন্য ফেডারেশন বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয় করছে।
এর সুফল হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সফলতা অর্জন করে আসছে আরচাররা। প্রতিটি আসরেই কোনো না কোনোভাবে পদক বা র্যাংকিংয়ের উন্নতি ঘটিয়ে আসছে বাংলাদেশের আরচাররা। কিন্তু সম্প্রতি টুর্নামেন্ট আয়োজনের নাম করে স্টেডিয়ামটি নিয়ন্ত্রনের জন্য বাফুফে স্বেচ্ছাচারি আরচরণ করছেন বলে দাবী মাইনুলের।
তিনি বলেন, ‘গত বছরও আরচারির কার্যক্রমের ফাঁকে সেখানে গুটি কয়েক ফুটবল ম্যাচ আয়োজনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্দেশনা মেনে মাঠটি ফুটবলকে ১৩ সপ্তাহের জন্য বরাদ্ধ দেওয়া হলেও ওই সময়ের মধ্যে তারা মাত্র পাঁচটি ম্যাচের আয়োজন করেছিল।’
এবারো দুই ফেডারেশনের সমন্বয়ের ভিত্তিতে আলোচনা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে টঙ্গীর স্টেডিয়াম ব্যবহারের নির্দেশনা পায় আরচারি ফেডারেশন। নির্দেশনার ভিত্তিতে এ বিষয়ে আরচারি ফেডারেশন তাদের এক সহ-সভাপতিকে আলোচনা করার দায়িত্ব দেয়। তিনি বাফুফের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা পাঁচদিনের মধ্যে আরচারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবে বলে জানায়। কিন্তু পাঁচদিনের জায়গায় ১৫ দিন হয়ে গেলেও বাফুফে কোন যোগাযোগ করেনি।
এদিকে গতকাল আরচারির কাছে পৌঁছানো ৩১ জুনয়ারি স্বাক্ষরিত একটি চিঠি গতকাল ফেডারেশনের মেইলে পেয়েছি, যেখানে টঙ্গির স্টেডিয়ামে বেশ কিছু ম্যাচ আয়োজনের সিদ্ধান্ত জানিয়ে একটি চিঠি প্রেরণ করে বাফুফে। চিঠিতে আরচারির কোন নাম উল্লেখ ছিলনা এবং ক্লাবের কোন আপত্তি থাকলে ১ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১টার মধ্যে জানানোর অনুরোধ করা হয়।
মাইনুল বলেন, ‘প্রথমত আমরা কোনো ক্লাব নই, আমরা ফেডারেশন, আর ফেডারেশনকে উল্লেখ করে এটি প্রেরন করা হয়নি, যেমনটি গতবার হয়েছিল। যা হোক তারা ফেব্রুয়ারিতে ১৫টি এবং মার্চে ১২টি ম্যাচ ওই ভেন্যুতে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে মার্চে ১৯ দিন এবং ফেব্রুয়ারির ২৭দিন সেখানে আরচারির যে প্রশিক্ষন সুচি রয়েছে তা বিঘ্নি ত হবে। অথচ গত বছর তাদেরকে সপ্তায় একটি করে ম্যাচের সময় বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছিল। তারা যদি এভাবে আমাদের মাঠ নিয়ে নেয় তাহলে জুন পর্যন্ত আমাদের সুচির ১৫টি টুর্নামেন্ট আয়োজনে ব্যর্থ হব। আরচারির নিয়ম অনুযায়ী তিন মাস অনুশীলন না করলে টুর্নামেন্টে খেলোয়াড় অন্তুর্ভুক্ত করা হয়না।’
আরচারি সভাপতি বলেন,‘আজ আবার মেইলে আরেকটি সুচি এসেছে, যেখানে ফেব্রুয়ারি-মার্চে ৩৫টি ম্যাচ রাখা হয়েছে। আজ সকালে আমাদের কেয়ারটেকার ফোন করে জানাল, মাঠ থেকে তাদের বের করে দিয়েছে। সেখানে মাঠ সমান করার জন্য রোলার আসছে। আমি সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সেখানো পৌঁছে দেখি বাফুফের একজন কর্মী বসে আছে, তাকে মাঠ ঠিক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগকে কল করতে বললে তিনি কয়েক বারের চেস্টায় তাকে পেলে সোহাগ বলে দেন,‘আমার সঙ্গে তার কথা বলার কিছু নেই, সময় নেই।’
আমি আসার পর সেখানে আসা স্থানীয় এক রাজনীতিবিদ ও বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্য গিয়ে বলেন, সরকার এটি আমাদের বরাদ্ধ দিয়েছে তাই এখানে আমরাই খেলব। এক পর্যায়ে তিনি আমাকে টেলিফোনে বলেন, আমরা এই মাঠেই খেলব আপনার যা খুশি করেন। তিনি আমাদের সাধারণ সম্পাদক এবং আমার সাথে কিছু ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা বলেছেন। যেটি ভদ্র সমাজে কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ক্রীড়াঙ্গনের মানুষ কখনো এমনটি করতে পারে না।’