ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম নাকি ধোনি রিভিউ সিস্টেম?
ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম বা ডিআরএস নিয়ে তো কম নাটক করেনি ভারত! অন্য দলগুলোর চাপে শেষ পর্যন্ত প্রযুক্তির ব্যবহার করতে বাধ্য হয়েছে ক্রিকেট বিশ্বের প্রভাবশালী দেশটি। আর ইংল্যান্ড সিরিজ দিয়েই অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তির যুগে ঢুকে পড়ল ভারতীয় ক্রিকেট।
আর এর সুফলও পেতে শুরু করেছে ভারত। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডের ২৭তম ওভারে হার্দিক পান্ডের বল ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ইয়ন মরগানের ব্যাট ছুঁয়ে জমা হয় ধোনির গ্লাভসে। সমস্বরে আবেদন করেন ভারতীয় ফিল্ডাররা। তবে আম্পায়ার আউটের আবেদনে সাড়া দেননি। এরপরই রিভিউ চেয়ে বসেন ধোনি। যদিও রিভিউ চাওয়ার কথা কোহলির। তবে ‘ক্যাপ্টেন কুল’ সেটা বোধ হয় ভুলে গিয়েছিলেন। রিপ্লেতে দেখা যায়, বলটি মরগানের ব্যাটেই লেগেছিল। সিদ্ধান্ত গেল ভারতের পক্ষে।
আজ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও রিভিউ চেয়ে সফল ধোনি। ভারতীয় ইনিংসের ৪১তম ওভারে ক্রিস ওকসের বল যুবরাজের ব্যাটে লেগে বাটলারের গ্লাভসে জমা হয়। আম্পায়ার অনিল চৌধুরী আঙুল তুলে দেন। যুবরাজের রান তখন ১৪৭। এবারও রিভিউ নেন ধোনি। রিপ্লেতে দেখা যায় যুবরাজের ব্যাটে লেগে বল লাগার পর তা মাটিতে ছুঁয়ে যায়। এবারও রিভিউ নিয়ে সফল ধোনি। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টগুলোতেও এর আগে ডিআরএসের বেশির ভাগ সিদ্ধান্ত ধোনির পক্ষে গেছে। বিরাট কোহলির মতে, ‘আমার দেখা ৯৫ ভাগ ক্ষেত্রেই সফল আবেদন করেন ধোনি।’
অবশ্য বিপরীতও হয়েছে। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ৩৩৮ রান করেও ইংল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচ টাই হওয়ার পর রিভিউ সিস্টেম নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন ধোনি। এলবিডব্লিউ হলেও ক্রিজ থেকে ২ দশমিক ৫ মিটার দূরে থাকায় সেদিন বেঁচে যান বেল। তবে বিষয়টি ভালোভাবে নেননি ধোনি। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত ভারতের বিপক্ষে যায়। এরপরই ডিআরএসের বিরুদ্ধাচরণ করতে থাকে ভারত।
বাকি দেশগুলো এই প্রযুক্তি ব্যবহার করলেও এতদিন ভারত এটা থেকে দূরে ছিল। তবে অন্যদেশগুলোর চাপে পড়ে ডিআরএস গ্রহণে বাধ্য হন ধোনিরা। গত বছর বিরাট কোহলিই এই বিষয়ে তৎকালীন বোর্ড সভাপতি অনুরাগ বসুর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ভারত অবশ্য প্রথম থেকেই ডিআরএসের বিষয়ে নমনীয় ছিল। তাদের মূল আপত্তির জায়গা ছিল হকআই (জটিল এক কম্পিউটার পদ্ধতি যার দ্বারা বোঝা যায় বল সম্ভাব্য কোন পথে যেতে পারে)।
এই পদ্ধতির বিপক্ষে কথা বলেন শচীন টেন্ডুলকারের মতো মহারথীরাও। টেনিসে রজার ফেদেরারও এই পদ্ধতি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তাই ইংল্যান্ড সিরিজে হকআই পদ্ধতি ব্যবহার করছে না ভারত। তার বদলে হট স্পট পদ্ধতি ব্যবহার করছে দেশটি। এটি এমন একটি প্রযুক্তি, যা ইনফ্রা-রেড ইমেজিং পদ্ধতি যার মাধ্যমে বল ব্যাটসম্যানের ব্যাট বা প্যাডে লেগেছে কি না বলে দেয়। সামান্য খোঁচা বা ব্যাট-প্যাড ক্যাচ হলে সেই জায়গার তাপমাত্রা বেড়ে যায় ও অংশটি উজ্জ্বল দেখায়।