চলে গেলেন ‘লেকার’ টেস্টের আরেক নায়ক

খুব সাদামাদা একটা ক্যারিয়ার। বলার মতো তেমন কিছুই নেই। তবুও ক্রিকেটে অমর হয়ে থাকবেন পিটার রিচার্ডসন। কারণ ১৯৫৬ সালের যে টেস্টের দুই ইনিংসে ১৯ উইকেটে নিয়েছিলেন জিম লেকার সেই টেস্টেই ইংল্যান্ডের হয়ে সেঞ্চুরি করেছিলেন রিচার্ডসন। নিজের কীর্তির কারণে না হলেও যতবারই সেই টেস্টের কথা উঠবে, পিটার রিচার্ডসনকে স্মরণ করতেই হবে।
১৯৫৬ সালের ২৬ জুলাই ওল্ড ট্রাফোর্ডে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের সেই টেস্টটি কেবল লেকারের কারণেই বিখ্যাত। টস জিতে ব্যাট হাতে মাঠে নেমে এক দুর্দান্ত সূচনা করেছিল স্বাগতিক ইংল্যান্ড। পিটার রিচার্ডসন ও ডেভিড শেপার্ডের সেঞ্চুরিতে ইংলিশদের সংগ্রহ ৪৫৯ রান। ২২২ বলে ১০৪ রান করেন রিচার্ডসন। উদ্বোধনী জুটিতেই ইংল্যান্ডের জয়ের ভিতটা গড়ে দেন এই ব্যাটসম্যান। কলিন কাউড্রেকে নিয়ে গড়েন ১৭৪ রানের জুটি। ১৭৪ রানে কাউড্রে আউট হওয়ার খানিক বাদে রিচার্ডসনও আউট হন। ততক্ষণে অবশ্য সেঞ্চুরিটা হয়ে গেছে তার। শেষ পর্যন্ত ৪৫৯ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড।
জিম লেকারের ঘূর্ণি জাদুতে কিছু বোঝে ওঠার আগেই শেষ হয়ে গেল অসিদের ইনিংস। ৮৪ রানেই অল আউট টিম অস্ট্রেলিয়া। ৩৭ রানে একাই ৯ উইকেট নিলেন ইংলিশ স্পিনার জিম লেকার। ফলোঅনে পড়ে বিধ্বস্ত অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটা খুব দেখেশুনেই করল। তবে শেষ পর্যন্ত অসি ওপেনার কলিন ম্যাকডোনাল্ডের ৮৯ রান ছাড়া আর কেউই তেমন রান করতে পারলেন না। ২০৫ রানে শেষ অসিদের সব উইকেট। আর এবারের ১০ উইকেটের একক মালিক জিম লেকার। ৯০ রানে ১৯ উইকেট নিয়ে ইতিহাসের পাতায় এমন এক রেকর্ড লিখে দিলেন, যা হয়তো আজীবন শুধু তারই থাকবে।
একই ম্যাচে সেঞ্চুরি করে লেকারের সঙ্গে ইতিহাসে ঢুকে গেলেন পিটার রিচার্ডসনও। ১৯৫৬ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের হয়ে ৩৪টি ৩৪টি টেস্টে মাঠে নামেন বামহাতি এই ব্যাটসম্যান। পাঁচটি সেঞ্চুরিসহ নয়টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে তাঁর নামের পাশে। ১৯৫৬ সালে ৪৯১ রান করেন তিনি। সে বছর তাঁর চেয়ে বেশি রান করতে পারেনি আর কেউই।
১৫ বছরের বেশি সময় ধরে প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেন পিটার রিচার্ডসন। ৪৪টি সেঞ্চুরিসহ ২৬০৫৫ রান সংগ্রহ করেন তিনি। বল হাতে নিয়েছেন ১১ উইকেট। বিখ্যাত সেই টেস্টের অখ্যাত ব্যাটসম্যানকে নিয়ে আলোচনার কারণ হলো আজ পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন এই ক্রিকেটার। সকালে ইংল্যান্ডে নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি। ১৯৩১ সালে ইংল্যান্ডের সারেতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।