নিজেদের নির্দোষ দাবি ব্ল্যাটার-প্লাতিনির
ফিফা সভাপতি সেপ ব্ল্যাটার ও উয়েফা সভাপতি মিশেল প্লাতিনির মধ্যে ২০ লাখ ডলার আদান-প্রদানের অভিযোগ নিয়ে নতুন করে তদন্তে নেমেছে সুইস কর্তৃপক্ষ। বিশ্ব ফুটবলের দুই প্রভাবশালী প্রশাসক তাই ভীষণ অস্বস্তিতে এখন। দুজনেরই অবশ্য দাবি, কোনো ধরনের দুর্নীতি বা অনৈতিকতার সঙ্গে জড়িত নন তাঁরা।
গত মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা। সে সময় সুইজারল্যান্ডের জুরিখে ফিফার কংগ্রেসের ঠিক আগে একটি হোটেল থেকে শীর্ষস্থানীয় সাত কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছিল সুইস পুলিশ। কংগ্রেসে অবশ্য পঞ্চমবারের মতো ফিফা সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন ব্ল্যাটার। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার মাত্র চার দিন পর দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে সবাইকে হতবাক করে দেন তিনি। কয়েক দিন আগে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ফিফার মহাসচিব জেরোম ভালকের বরখাস্তের ঘটনায় পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে পড়ে। এবার অভিযোগের তীর ব্ল্যাটার ও প্লাতিনির দিকে।
সুইস আইনজীবীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্লাতিনির সঙ্গে ২০ লাখ ডলারের ‘অনৈতিক’ লেনদেন করেছিলেন ব্ল্যাটার। যদিও ফিফার দাবি, ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত প্লাতিনি ফিফার হয়ে যে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তারই পারিশ্রমিক হিসেবে এই ২০ লাখ ডলার দেওয়া হয়েছে। তবে এতদিন পর কেন এই অর্থ দেওয়া হলো, সে ব্যাপারে কোনো ব্যাখ্যা দেননি ব্ল্যাটার বা প্লাতিনি।
আত্মপক্ষ সমর্থন করে ইউরোপীয় জাতীয় ফুটবল সংস্থার কাছে লেখা এক চিঠিতে প্লাতিনি বলেছেন, ‘১৯৯৮ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ফিফা আমাকে নিয়োগ দিয়েছিল ফুটবল-সংশ্লিষ্ট অনেক কাজ করার জন্য। এটা ছিল একটা পূর্ণকালীন চাকরি। আমার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সবাই ভালোমতোই জানেন। পারিশ্রমিকের ব্যাপারে তখন একটা চুক্তি হয়েছিল। অগ্রিম হিসেবে কিছু অর্থ দেওয়া হয়েছিল। আর পুরো বেতন ২০ লাখ ডলার ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে পরিশোধ করা হয়। সুইস আইন অনুযায়ী এই পারিশ্রমিকের ব্যাপারে আমি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।’
১৯৯৮ সাল থেকে ফিফা সভাপতির দায়িত্ব পালন করা ব্ল্যাটারের বিরুদ্ধে এই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ফুটবল-দুনিয়ায় তোলপাড় চললেও তেমন বিচলিত নন তিনি। সোমবার জুরিখে ফিফার এক বৈঠকে ব্ল্যাটারের সুস্পষ্ট ঘোষণা, তদন্ত চললেও এখনই ফিফা সভাপতির দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই তাঁর। আগামী ফেব্রুয়ারিতে ফিফার পরবর্তী সভাপতি নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগ পর্যন্ত ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থার সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন ব্ল্যাটার।
দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠায় ফিফার নীতিনির্ধারক কমিটিও জিজ্ঞাসাবাদ করবে ব্ল্যাটার ও প্লাতিনিকে। এ ব্যাপারে ফিফাকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন প্লাতিনি। ফিফা সভাপতি নির্বাচনের প্রধান প্রার্থী হিসেবে ফ্রান্সের এই কিংবদন্তি ফুটবলারকে বিবেচনা করা হচ্ছে।