বাংলাদেশের আরেকটি হতাশার সাফ
পরাজয়ের হতাশা দিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের। গত বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের কাছে প্রথম ম্যাচে ৪-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে হেরেছিল লাল-সবুজের দল। ‘দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপে’ শেষ চারে খেলার স্বপ্ন নিয়ে শনিবার নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মালদ্বীপের মুখোমুখি হয়েছিলেন মামুনুল-জাহিদ-জামালরা। কিন্তু এই ম্যাচেও ব্যর্থ বাংলাদেশ। এবার হারের ব্যবধান ৩-১। তাই দুই বছর আগের কাঠমান্ডুর মতো কেরালা থেকেও হতাশা নিয়ে ফিরতে হচ্ছে জাতীয় ফুটবল দলকে।
টানা দ্বিতীয় হারের লজ্জায় পড়া বাংলাদেশ আগামী সোমবার শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে ভুটানের। টানা দ্বিতীয় জয়ে মালদ্বীপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গেছে। প্রথম ম্যাচে দ্বীপ দেশটি ৩-১ গোলেই হারিয়েছিল ভুটানকে।
ত্রিবান্দ্রাম আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধে দারুণ খেললেও ৪২ মিনিটে পেনাল্টি গোলে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। মালদ্বীপকে এগিয়ে দেন দলটির সবচেয়ে বড় তারকা ও অধিনায়ক আলী আশফাক। বক্সের মধ্যে মালদ্বীপের এক খেলোয়াড়ের শট বাংলাদেশের ডিফেন্ডার ওয়ালী ফয়সালের হাতে লাগলে রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন।
আশফাকের নেওয়া পেনাল্টি শট বাংলাদেশ গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল অবশ্য প্রায় ঠেকিয়েই দিয়েছিলেন। তবে ঝাঁপিয়ে পড়ে বলে হাত ঠেকালেও অল্পের জন্য জাল অরক্ষিত রাখতে পারেননি।
এক গোলে পিছিয়ে পড়ে বিরতির পর শুরু থেকেই প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগের ওপর চড়াও হয় বাংলাদেশ। বেশ কয়েকটি সুযোগ নষ্টের পর অবশেষে ৮৭ মিনিটে সমতা ফেরান মারুফুল হকের শিষ্যরা। বদলি ফরোয়ার্ড সোহেল রানার জোরালো শটে মিডফিল্ডার হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাসের মাথা ছুঁয়ে বল মালদ্বীপের জালে চলে যায় (১-১)।
কিন্তু বাংলাদেশের এক পয়েন্ট পাওয়ার আশা পূরণ হয়নি। ইনজুরি সময় শুরু হওয়ার ঠিক আগে ফরোয়ার্ড হাসান নিয়াজের অসাধারণ এক গোলে আবার এগিয়ে যায় মালদ্বীপ (২-১)। আর শেষ মুহূর্তে পাল্টা আক্রমণ থেকে স্ট্রাইকার নাশিদ আহমদের লক্ষ্যভেদ বাংলাদেশের হার নিশ্চিত করে দেয় (৩-১)।
এর আগে ম্যাচের ২৬ মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। ডিফেন্ডার ওয়ালী ফয়সালের চমৎকার ক্রসে ফরোয়ার্ড জাহিদ হোসেনের হেড সাইডবারে লাগলে লালা-সবুজ দলের প্রথম প্রচেষ্টা নষ্ট হয়ে যায়।
তিন মিনিট পর আরো একটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন স্ট্রাইকার শাখাওয়াত হোসেন রনি। এবারও বলের জোগানদাতা ওয়ালী ফয়সাল। তাঁর ক্রস থেকে গোলরক্ষককে একা পেয়েও রনি গোল করতে পারেননি।
বিরতির পর সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। ৫৩ মিনিটে মিডফিল্ডার হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাসের দারুণ একটি ক্রসে অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম ঠিক মতো হেড করতে না পারায় আরেকটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। শনিবার বাংলাদেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার ছিলেন অনেকটাই নিষ্প্রভ।
৭২ মিনিটে মামুনুল ইসলামের দারুণ একটি ফ্রি-কিক কর্নারের বিনিময়ে বিপদমুক্ত করে বাংলাদেশ হতাশ করেন মালদ্বীপের এক ডিফেন্ডার। দুই মিনিট পর আরো একটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায় রনির কারণে। মিডফিল্ডার জামাল ভূঁইয়ার বাড়িয়ে দেওয়া বল ধরে বক্সে ঢুকলেও দু্ই ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে বেরিয়ে গোল করতে পারেননি তিনি।
এভাবে সুযোগ নষ্টের মাশুল দিয়ে আরেকটি হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে।