এমন দিনে মাকে স্মরণ করলেন দিয়াবাতে
অবিস্মরণীয় বললেও কি কম বলা হবে ফেডারেশন কাপের ফাইনালকে? সম্ভবত হ্যাঁ! একের পর এর বিতর্কে জর্জরিত দেশের ফুটবলে ঢাকা মোহামেডান-ঢাকা আবাহনীর ‘ঢাকা ডার্বি’ ম্যাচটা যেন কাজ করেছে ওষুধের মতো। ম্যাচটাকে ঢাকা ডার্বি না বলে সোলায়মান দিয়াবাতের ম্যাচ বললেও কেউ আপত্তি তুলবে না। আফ্রিকার দেশ মালির এক ফুটবলার আজ যা করলেন, দেশের ফুটবলের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে সেটি।
আজ মঙ্গলবার (৩০ মে) কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে হওয়া ফেডারেশন কাপের ফাইনালের নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ফলাফল ছিল আবাহনী ৩, মোহামেডান ৩। পরের ৩০ মিনিট মিলিয়ে ১২০ মিনিট শেষ স্কোরলাইন ৪-৪। একটু অন্যভাবেও বলা যেতে পারে চাইলে। আবাহনী ৩, দিয়াবাতে ৩। আবাহনী ৪, দিয়াবাতে ৪।
আট গোলের মহারণে বারবার পিছিয়ে পড়ে ফিরে আসার যে মহাকাব্য লিখেছে মোহামেডান, তার রচয়িতা তো দিয়াবাতেই। একাই চার গোল দিয়ে বুক চিতিয়ে লড়ে গেছেন শেষ পর্যন্ত। মোহামেডানের অধিনায়ক তিনি। নেতার মতোই সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ফাইনালের চার গোলসহ আসরে মোট গোল নিয়ে ফেডারেশন কাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। প্রত্যাশিতভাবেই হাতে উঠেছে ম্যাচসেরা, টুর্নামেন্ট সেরা ও সর্বোচ্চ গোলদাতার তিনটি পুরস্কার।
কোনো ফাইনালে এবারই প্রথম চার গোল করলেন দিয়াবাতে। টাইব্রেকার ধরলে জালে বল জড়ানোর সংখ্যা পাঁচ। ম্যাচ শেষে মোহামেডানের উৎসব যেন থামছিলই না। ১২ বছর পর ফেডারেশন কাপের শিরোপা পেয়েছে মতিঝিল পাড়ার ক্লাবটি। বাঁধনহারা উল্লাসই স্বাভাবিক।
তবু, গণমাধ্যম খুঁজে বেরিয়েছে দিয়াবাতেকে। আনন্দের মধ্যেই তিনি বলেন, “এই শিরোপা আমি আমার মা, পবিবার ও সমর্থকদের উৎসর্গ করছি। মাকে, পরিবারকে খুব মনে পড়ছে। তারা দেশে (মালি) আছে। আল্লাহর প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। গোটা দল আমাকে সাহায্য করেছে সবটুকু উজাড় করে।”
এক দিয়াবাতের ঝড়েই লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে আবাহনী। মোহামেডান পেয়েছে ২০০৯ সালের পর কোনো ফাইনালে আবাহনীকে হারানোর স্বাদ। এমন দিন দিয়াবাতেরই নয় শুধু, দেশের ফুটবলেই খুব কম এসেছে।