চেন্নাইকে বিদায় করে আইপিএলের প্লে-অফে বেঙ্গালুরু
ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস না কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, কে যাবে আইপিএলের প্লে-অফে। কঠিন এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য ভক্তদের অপেক্ষা অবশেষে ফুরিয়েছে। বাঁচা-মরার ম্যাচে স্নায়ুচাপে ভেঙে পড়ে বিদায় নিল পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন সিএসকে। আর অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনে শেষ চার নিশ্চিত করল আরসিবি।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য চেন্নাইয়ের প্রয়োজন ছিল ৩৫ রান, হাতে ছিল ৪ উইকেট। প্রথম বলে যশ দয়ালকে ছক্কা হাঁকিয়ে ভালো শুরু করেন ধোনি। তবে, দ্বিতীয় বলেই তাকে আউট করে ম্যাচের দৃশ্যপট পাল্টে দেন দয়াল। পরে জাদেজা চেষ্টা করেও দলকে জেতাতে পারেননি। গতকাল শনিবার (১৮ মে) এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২১৮ রান তোলে বেঙ্গালুরু। জবাবে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৯১ রানে থামে চেন্নাই। ২৭ রানের জয়ে পয়েন্ট টেবিলের চারে থেকে প্লে-অফ নিশ্চিত করল বেঙ্গালুরু।
আরসিবি যে শেষ চারে যাবে, তা আসরের শুরুতে হয়তো কেউই ভাবেনি। হারের বৃত্তে থাকা দলটিই কি না টানা ৬ ম্যাচে জিতে সবাইকে তাক লাগিয়ে শেষ চার নিশ্চিত করল। ২১৯ রানের বড় লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি চেন্নাইয়ের। ম্যাক্সওয়েলের প্রথম বলেই উইকেট বিলিয়ে দেন অধিনায়ক রতুরাজ। শুরুর ধাক্কা সামাল দিতে পারেননি চেন্নাই। দলীয় ১৯ রানের মাথায় হারায় কিউই ব্যাটার ড্যারিল মিচেলকে। ৬ বলে ৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এরপর অজিনকা রাহানে ও রাচীন রবীন্দ্র মিলে দলকে এগিয়ে নেন।এই দুই ব্যাটারের ব্যাটে চাপে পড়ে বেঙ্গালুরুর বোলাররা। দলীয় ৮৫ রানে রাহানের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। ২২ বলে ৩৩ রান করে ফেরেন রাহানে। এরপর দ্রুতই রাচীন রবীন্দ্র, শিবাম দুবে ও মিচেল স্যান্টনারের উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে চেন্নাই। ৩৭ বলে ৬১ রান করে বিদায় নেন রাচীন। শেষদিকে ধোনি ও জাদেজার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ম্যাচে ফিরে চেন্নাই। যদিও দলীয় ১৯০ রানের মাথায় সাজঘরে ফিরেন ধোনি। ১৩ বলে ২৫ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এর আগে, প্লে-অফে যেতে হলে বড় স্কোর গড়ার পাশাপাশি চেন্নাইকে ১৮ রানের বেশি ব্যবধানে হারাতে হবে, এমন সমীকরণ মাথায় নিয়েই ব্যাটিংয়ে নামেন দুই ওপেনার বিরাট কোহলি ও ফাফ ডু প্লেসিস। নেমেই উড়ন্ত শুরু করেন এই দুই ব্যাটার। মাত্র ৩ ওভারেই স্কোরবোর্ডে তুলে ফেলেন ৩১ রান। এরপরই বৃষ্টির হানা। খেলা বন্ধ থাকে ৪০ মিনিট।
বৃষ্টির পর ব্যাটিংয়ে নেমে সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখে স্বাগতিকরা। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৪২ রান তুলে ফেলে বেঙ্গালুরু। পরবর্তীতে দলীয় ৭২ রানের মাথায় কোহলির বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। ২৯ বলে ৪৭ রান করে স্যান্টনারের বলে সাজঘরে ফেরেন এই তারকা ব্যাটার।
কোহলির বিদায়ের পর রজত পাতিদারকে সঙ্গে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন ডু প্লেসি। এই জুটিতে যোগ হয় আরও ৪১ রান। দলীয় ১১৩ রানের মাথায় রান আউট হয়ে ফেরেন ডু প্লেসি। আউটের আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৯ বলে ৫৪ রান। এরপর ক্যামেরুন গ্রিনকে রানের চাকা সচল রাখেন পাতিদার।
শেষপর্যন্ত এই দুই ব্যাটারের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে স্কোরবোর্ডে বড় সংগ্রহের ভিত পায় দলটি। দলীয় ১৮৪ রানের মাথায় পাতিদারের বিদায়ে তৃতীয় উইকেট হারায় বেঙ্গালুরু। ২৩ বলে ৪১ রানের ইনিংস খেলে মিচেলে হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাজঘরে। শেষদিকে ম্যাক্সওয়েলের ছোট্ট ক্যামিওতে বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় বেঙ্গালুরু। চেন্নাইয়ের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ ২টি উইকেট নেন শারদুল ঠাকুর।