কী আছে সাকিবের ভাগ্যে?
সাকিব আল হাসানকে লোকে যতটা তার খেলার জন্য মনে রেখেছে, ততটাই মনে রেখেছিল সাহসের জন্য। বাংলার ক্রিকেটের সত্যিকার সুপার হিরো হয়েই থাকতেন। থাকতেন বলার কারণ, এখন আর সাকিব সুপার হিরো নেই। প্রতিবাদী কন্ঠের আরেক নাম সাকিব এমন সময়ে চুপ করে ছিলেন, যখন তাকে অনেক বেশি প্রয়োজন ছিল। ব্যক্তিকেন্দ্রিক সাকিব চুপ ছিলেন এমন দিনে, যেদিন পতন ঘটে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য হয়েও নির্ভারভাবে সেদিন কানাডায় ম্যাচ খেলেন সাকিব।
সাকিব অবশ্য ভাবতে পারেননি, কী অপেক্ষা করছে তার জন্য। পতন ঘটেছে আওয়ামী লীগ সরকারের। বিলুপ্ত হয়েছে সংসদ। দেশের ক্রান্তিলগ্নে যখন সবাই বুক চিতিয়ে লড়ছে, সাকিব উল্টো প্রশ্ন করেন—দেশের জন্য জনতা কী করেছে? এই অবস্থায় অনিশ্চয়তায় পড়েছে সাকিবের দেশে ফেরা। গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন ইতোমধ্যে, ক্ষুব্ধ মানুষ তাকে কতটা চায়, আদৌ চায় কি না সেটি প্রশ্ন হলেও উত্তর অনেকটাই অনুমেয়।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেও (বিসিবি) রয়েছে বদলের সম্ভাবনা। অহংকারী সাকিব সেখানে তুচ্ছ। চলতি আগস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে শুরু হবে বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজ। সেই সিরিজের দলে সাকিবকে রাখা হবে কি না, তা অনিশ্চিত। তাকে রাখলে নিশ্চিতভাবেই বিসিবিকে পড়তে হবে তোপের মুখে। টালমাটাল সময়ে ঘাড়ের ওপর বাড়তি বোঝা নিতে চায় কেইবা!
গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বুধবার (৭ আগস্ট) বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের সহকারী ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফিস কথা বলেন সাকিব প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আগামী ১২ আগস্ট পর্যন্ত সাকিবের অনাপত্তিপত্র (এনওসি) আছে। ১৩ আগস্ট তার দেশে আসার কথা বা আমাদের কাছে রিপোর্ট করার কথা। যদিও কিছুদিন সময় রয়েছে, তাই তার সঙ্গে আলোচনা করেই তার পরিকল্পনা কি তা জানার চেষ্টা করব। সে একজন ক্রিকেটার। রাষ্ট্রপতির আদেশ অনুযায়ী সাকিব কিন্তু এখন আর সংসদ সদস্য পদে নেই। নির্বাচক প্যানেল এখনও পাকিস্তান সিরিজের দল ঘোষণা করেননি। যখন তারা দল ঘোষণা করবেন, তখন বোঝা যাবে। সাকিব যদি দলে থাকেন তাহলে একরকম ভাবনা, না থাকলে আরেক রকম।’
এমনটা হলে ধরা যায়, আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার প্রায় শেষ সাকিবের। যদিও, অপেক্ষা পাকিস্তান সিরিজের দল ঘোষণার। তবে, সাকিব নিজেও জানেন সময় তার পক্ষে নেই।