মালদ্বীপকে কাঁপিয়ে হারল বাংলাদেশ
ম্যাচের শুরু আর শেষের ১০ মিনিটে ভীষণ সাদৃশ্য। মালদ্বীপকে কোনো সুযোগ দেয়নি বাংলাদেশ। আক্রমণের ঝড় তুলে পাত্তাই দেয়নি প্রতিপক্ষকে। দুরন্ত সব আক্রমণ, সম্ভাবনা, সুযোগ–সবই তৈরি হয়েছিল। কেবল গোলটাই পায়নি বাংলাদেশ। দিন শেষে ফুটবল গোলের খেলা। সেখানেই আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর) পিছিয়ে পড়েছে স্বাগতিকরা। ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে মালদ্বীপের বিপক্ষে ঘরের মাঠ বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় বাংলাদেশ হেরেছে ১-০ গোলে।
প্রথমার্ধেও আধিপত্য নিয়েই খেলেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধেও তারও ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারা এবং খানিকটা দুর্ভাগ্য জিততে দেয়নি বাংলাদেশকে। ম্যাচের বয়স যখন ৭৪ মিনিট, বাংলাদেশ সমতা ফেরাতে পারত। মুজিবুর রহমান জনি ও শাহরিয়ার ইমনের যুগলবন্দিতে দারুণ এক আক্রমণ সাজায় বংলাদেশ। জনির শটে ম্যাচে প্রথমবারের মতো বড় চ্যালেঞ্জের সামনে পড়েন মালদ্বীপ গোলরক্ষক। জনির ক্ষিপ্রগতির শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে দলকে বাঁচান তিনি।
ম্যাচের ৮৬ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে ফের জনির ক্ষিপ্রতা, বল বাড়ালেন রাকিবের দিকে। অফসাইডের ফাঁদ ঠেলে রাকিব একাই টানলেন। সামনে শুধু গোলরক্ষক। এমন সময় তার কাছ থেকে শটই আশা করছিল দল। সবাইকে অবাক করে গতি কমিয়ে রাকিব যেন অপেক্ষা করছিলেন কারও। মোরসালিন এলেন, শট নিলেন। মাটি কামড়ানো শটটি বামদিকে ঝাপিয়ে বাঁচালেন হুসেইন শরীফ। আরও একবার দারুণ আক্রমণের পরও হতাশা সঙ্গী। শেষ পর্যন্ত এই হতাশাই বাংলাদেশের সঙ্গে টানেলে গিয়েছে পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে। প্রথমার্ধের ১৮ মিনিটে খাওয়া সেই গোলটি আর শোধ হয়নি।
৪-৩-৩ ফর্মেশেনে দল সাজান বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। ম্যাচের প্রথম ১০ মিনিট মালদ্বীপকে রীতিমতো নাস্তানাবুদ করে বাংলাদেশ। একের পর এক আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত রাখে প্রতিপক্ষকে। দ্বিতীয় মিনিটেই গোল পেতে পারত স্বাগতিকরা। মাঝমাঠ থেকে সোহেল রানা খুঁজে নেন রাকিব হোসেইনকে। মালদ্বীপ গোলরক্ষক হুসেইন শরীফকে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন ফরোয়ার্ড রাকিব। চতুর্থ মিনিটে আবারও সুযোগ পায় বাংলাদেশ। এবার বামপ্রান্ত থেকে ঈসা ফয়সালের শটে শেখ মোরসালিনের হেড। তবে, সেটি গোলের জন্য যথেষ্ট ছিল না।
প্রথম ১০ মিনিটে আরও সুযোগ আসে বাংলাদেশের সামনে। আট মিনিটে প্রতিপক্ষের ভুলে বল পান ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। মাঝমাঠ থেকে বল একাই টেনে নিয়ে যান। কিন্তু, প্রতিপক্ষের রক্ষণে পাননি স্বদেশি কাউকেই। ভেস্তে যায় সেই আক্রমণও। স্রোতের বিপরীতে ১১ মিনিটে গোলের সুযোগ পায় মালদ্বীপ। বাংলাদেশি রক্ষণের ভুলে বল পান দলটির ফরোয়ার্ড নাইজ হাসান। বাঁ দিক থেকে দারুণ শট দেন, তারচেয়ে দ্বিগুণ সৌন্দর্যে সেইভ করেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক মিতুল মারমা।
১৪ মিনিটে ফাহিম আরও একটি আক্রমণ সাজান। বাম দিক ধরে এগিয়ে যান প্রবল গতিতে, কিন্তু প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে বল দেওয়ার মতো কাউকে পাননি। বেশ কয়েকটি আক্রমণ সাজিয়েও বাংলাদেশ গোল করতে পারেনি।
অন্যদিকে, মালদ্বীপকে সেই হতাশায় পুড়তে হয়নি। ১৮ মিনিটে ফরোয়ার্ড হামজা মোহাম্মদের ফ্রি-কিকে বাংলাদেশের ডি-বক্সে বল পান আলী ফাসির। বল জালে জড়াতে ভুল করেননি তিনি। ফাসিরের গোলে এগিয়ে যায় মালদ্বীপ। পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ অবশ্য থামায়নি আক্রমণ। একের পর এক সুযোগ তৈরি করেছে মালদ্বীপের রক্ষণভাগে। তবে, প্রতিপক্ষ সেসব সহজেই সামলে নিতে পেরেছে। বাংলাদেশের সুযোগগুলো মালদ্বীপের জন্য চাপ হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। স্বাগতিকদের ফিনিশিং দুর্বলতায় পার পেয়েছে তারা।