ভারতের কাছে শিরোপা হাতছাড়া করল বাংলাদেশ

নাটকীয়তায় মোড়ানো সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। বল পজেশন, পাসিং কিংবা আক্রমণ-- সবকিছুতেই ঢের এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। তবুও দুই ভুলে ম্যাচ হারতে বসেছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। হেরে যাওয়া ম্যাচে প্রাণ ফেরালেন ডিফেন্ডার সাব্বির ইসলাম। কিন্তু টাইব্রেকারে যেন বাংলাদেশ নিজে হাতে শিরোপা তুলে দিল ভারতের হাতে। প্রথম দুই শটের দুটিতেই গোল করতে ব্যর্থ হওয়ায় শিরোপা হাতছাড়া করে বাংলাদেশ।
আজ শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) শ্রীলঙ্কায় সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ গোলে ড্র হয়। এরপর টাইব্রেকারে ভারতের কাছে ৪-১ ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ।
টাইব্রেকারে প্রথম দুই শটের কোনোটি থেকেই গোল আদায় করতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম শট গোলবারে মেরে বসেন ইকরামুল ইসলাম। এরপর আজম খানের নেওয়া দুর্বল দ্বিতীয় শট আটকে দেন ভারতের গোলরক্ষক। বিপরীতে প্রথম চার শটের সবগুলো থেকেই গোল আদায় করে নেয় ভারত।
ম্যাচের প্রথম শট নেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া সেই শট আটকে দেন ভারতের গোলরক্ষক। এর এক মিনিট পরই উল্টো গোল হজম করে বসে বাংলাদেশ।
মাঝমাঠে ফ্রি-কিক পায় ভারত। সেটা আটকাতে সবাই বক্সের সামনে মানব প্রাচীর তৈরি করলেও ভারত বামপ্রান্তে থ্রু বল বাড়ায়। সেখান থেকে ক্রস আসে বক্সে। সেখান থেকে বল জালে জড়িয়ে দেয় ভারত।
২৪ মিনিটে ম্যাচে সমতা ফেরায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক নাজমুল হুদা ফয়সালের বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া দূরপাল্লার শট কর্ণারের বিনিময়ে রক্ষা করেন ভারতের গোলরক্ষক। এরপর কর্ণার থেকে জাল খুঁজে নেয় বাংলাদেশ। কর্ণার থেকে দূরের পোস্টে বল পাঠায় ফয়সাল। হেডারে আরেকপোস্টে বল পাঠায় আজিম খান। সেখানে থাকা মানিক মিয়া হেডে বল জড়িয়ে দেয় জালে।
ম্যাচের ৩৭ মিনিটে আবারও ডিফেন্ডারদের ভুলে গোলহজম করে বসে বাংলাদেশ। ভারতের আক্রমণ প্রথম দফা গোলরক্ষক আলিফ আটকে দিলেও, সেটা পুরোপুরি ক্লিয়ার না হওয়ায় বল চলে যায় ভারতীয় ফুটবলারের পায়। তার সামনেই ছিল দুজন বাংলাদেশি ফুটবলার। ডিফেন্ডার ইকরামুল ইসলাম বলের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেই বল আটকে যেত। কিন্তু সেটাকে বাম প্রান্ত দিয়ে ক্লিয়ার করতে গেলে উল্টো বল চলে যায় বাংলাদেশের জালে।
৫০ মিনিটে বক্স থেকে নেওয়া ফয়সালের বুলেট গতির শট ফেরত আসে গোলবারে লেগে। ৫৪ মিনিটে সাব্বির ইসলামের শট বাইরে দিয়ে গেলে আরেকবার হতাশ হতে হয় বাংলাদেশকে।
মাঝখানে একবার বাংলাদেশ বক্সের মধ্যে হ্যান্ডবলের আবেদন করলেও রেফারি তাতে সারা দেননি। পরে আরেকবার বক্সের বাংলাদেশের আরিফ ফাউলের শিকার হলেও আবারো এড়িয়ে যান রেফারি। রিপ্লে দেখে ধারাভাষ্য কক্ষ থেকেও বলা হচ্ছিল, পরিষ্কার ফাউল এটি।
এরপরই গতি হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। অনেকটা সময় প্রথমার্ধের মতো ধার ছিল না খেলায়। শেষদিকে আবারও কিছুটা গতি বাড়ালেও ম্যাচে ফেরা সম্ভব হয়নি। লো-ব্লক ডিফেন্সে বাংলাদেশকে আটকে রাখে ভারত।
ম্যাচের ৮৮ মিনিটে বামপ্রান্ত ধরে আক্রমণে ওঠে বক্সে ঢুকে শট নিয়েছিলেন বায়েজিদ বোস্তামি। তবে ভারতের গোলরক্ষক কর্নারের বিনিময়ে আটকে দেন সেটি। কর্নার থেকে আবারো বক্সের মধ্যে হ্যান্ডবল করে ভারত। রেফারি সামনে থেকে দেখলেও পেনাল্টির বাঁশি বাজাননি।
অতিরিক্ত সময়ের শেষ মুহূর্তে সব হিসাব-নিকাশ বদলে দেয় বাংলাদেশ। লম্বা করে বাড়ানো থ্রো থেকে বক্সে জটলার মধ্য থেকে বল জালে জড়িয়ে দেয় সাব্বির। অতিরিক্ত সময় না থাকায় খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।