বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে শাওমির স্মার্টফোন, কারখানা গাজীপুরে

Looks like you've blocked notifications!
শাওমির আয়োজনে অতিথিরা। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের গাজীপুরে বিশাল কারখানা করেছে চীনের প্রযুক্তি পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান শাওমি। যার মাধ্যমে এখন থেকে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত অত্যাধুনিক সব স্মার্টফোন আনছে প্রতিষ্ঠানটি। কারখানায় আন্তর্জাতিক সব মান রক্ষা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী।

সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শাওমি বাংলাদেশে এ ফোন উৎপাদন কারখানার উদ্বোধনের ঘোষণা দেন।  

এ সময় আরও জানানো হয়, ডিবিজি টেকনোলজি বিডি লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশে স্মার্টফোন তৈরি করবে শাওমি। ডিবিজি একটি গ্লোবাল ইএমএস কোম্পানি, তাদের ম্যানুফ্যাকচারিং ব্যবসা রয়েছে বিশ্বব্যাপী। বিভিন্ন দেশের স্বনামধন্য কিছু ব্র্যান্ড ও কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স পণ্য তাদের কারখানায় তৈরি হয়। ডিবিজি হংকং স্টক এক্সচেঞ্জে পাবলিক লিস্টেড কোম্পানি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্পখাত ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুব্রত্র রায় মৈত্র। অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তা উপস্থাপন করেন টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী বাংলাদেশে শাওমির কারখানা চালু করার কারণ উল্লেখ করেন। তিনি তাঁর প্রেজেন্টেশনে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শাওমির অগ্রগতি তুলে ধরেন।

জিয়াউদ্দিন চৌধুরী জানান, ম্যানুফ্যাকচারিং পার্টনার ডিবিজির সঙ্গে শাওমি বাংলাদেশে কারখানা চালু করেছে। ডিবিজি একটি গ্লোবাল ইএমএস কোম্পানি, তাদের ম্যানুফ্যাকচারিং বিজনেস রয়েছে বিশ্বব্যাপী। চীন, ভিয়েতনাম, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের স্বনামধন্য কিছু ব্র্যান্ড ও কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স পণ্য তাদের কারখানায় এক্সপেলিক লিস্টেড কোম্পানি।

জিয়াউদ্দিন চৌধুরী বলেন, শাওমির অনন্য ও উদ্ভাবনী ধারণা, ডিরেক্ট-টু-কাস্টমার ব্যবসায়িক মডেল স্মার্টফোন শিল্পে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে। স্মার্টফোন উৎপাদনের মাধ্যমে বাংলাদেশের বাজারে আরও দীর্ঘমেয়াদে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছে শাওমি। এমন বিনিয়োগ মেড ইন বাংলাদেশ কার্যক্রমে আরও অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে সংযুক্ত করবে এবং বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে একটি ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে পরিচিত করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

জিয়াউদ্দিন চৌধুরী জানান, শাওমির বাংলাদেশি কারখানায় প্রায় এক হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। প্রায় ৫৫ হাজার বর্গফুট আয়তনের কারখানাটির অবস্থান গাজীপুরের বাইপাস রোডের কাছে। কৌশলগত কারণেই শাওমি গাজীপুরকে বেছে নিয়েছে কারখানা স্থাপনের জন্য। সেখানে দক্ষ শ্রমশক্তি, শক্তিশালী সাপ্লাই চেইন রয়েছে। ফলে সবকিছুর সমন্বয়েই একটি প্রযুক্তি কোম্পানি হিসেবে শাওমি জায়গাটিকে বেছে নিয়েছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, শাওমি বাংলাদেশে কারখানাটিতে রেডমি সাব ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন দিয়ে শুরু করছে ফোন উৎপাদন, যেটি আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

মেড ইন বাংলাদেশ ট্যাগ লাইনে বছরে ৩০ লাখ স্মার্টফোন উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছে শাওমি। এই কারখানায় ৯৯ শতাংশ কর্মী বাংলাদেশের।

সালমান এফ রহমান বলেন, শাওমির মতো কোম্পানির উৎপাদন কারখানা বাংলাদেশে স্থাপন প্রমাণ করে ডিজিটাল বাংলাদেশের সফলতা। বাংলাদেশে শাওমির প্রথম উৎপাদন ইউনিট স্থাপনে আমরা অংশীদার হতে পারে অনেক আনন্দিত। আমরা বিশ্বাস করি, এই অংশীদারত্বের মাধ্যমে দেশের তরুণদের কর্মসংস্থানের আরও সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং বৈশ্বিক ইলেকট্রনিক্স মানুফ্যাকচারিং ইকোসিস্টেমের হাব হবে বাংলাদেশ।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বাংলাদেশে যত বিদেশি স্মার্টফোন কোম্পানি ফোন বিক্রি করে, তার বেশির ভাগ কোম্পানিই বাংলাদেশে উৎপাদন শুরু করেছে। শাওমি তাদের মধ্যে অন্যতম। আমরা আশা করব, দেশে উৎপাদিত শাওমি ফোন বাংলাদেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করবে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ ক্রমশ আমদানিকারক দেশ থেকে উৎপাদনকারী দেশে রূপান্তরিত হচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা ইলেকট্রনিক্স পণ্য রপ্তানিতে পৃথিবীর শীর্ষস্থানে থাকব। এ সবই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণার মধ্য দিয়ে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

অনুষ্ঠানে শাওমির পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশে স্মার্টফোন উৎপাদনের পাশাপাশি পরিধেয় স্মার্ট ডিভাইস উৎপাদন বিক্রি করবে শাওমি।