গুগল প্লাসকে হুমকি ভেবেছিলেন মার্ক জাকারবার্গ!

Looks like you've blocked notifications!

২০১১ সালে যাত্রা শুরু করে নতুন একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘গুগল প্লাস’। ততদিনে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ফেসবুক। তবে ফেসবুকের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল গুগল প্লাস। আর তাই গুগল প্লাসের বিরুদ্ধে রীতিমতো যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন জাকারবার্গ।

যদিও সেটা ছিল তখন ফেসবুকের একেবারেই ভেতরকার ঘটনা। আর এত দিন পর সেই ঘটনা ফাঁস করলেন ফেসবুকের সাবেক কর্মী আন্তোনিও গার্সিয়া মার্টিনেজ।

‘ক্যাওয়াজ মাঙ্কিজ : অবসিন ফরচুন অ্যান্ড র‍্যানডম ফেইল্যুর ইন সিলিকন ভ্যালি’ নামের নতুন একটি বই লিখেছেন আন্তোনিও। সেখানেই এসব কথা লিখেছেন তিনি। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভ্যানিটি ফেয়ার।  

বইতে আন্তোনিও লিখেছেন, ‘ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী ভালো করেই জানতেন গুগল প্লাস তাঁদের জন্য হুমকি। আর সে কারণে গুগল প্লাস যাতে জনপ্রিয় হতে না পারে সেজন্য সব ব্যবস্থাই করেছেন তিনি। কোনোভাবেই যেন গুগল প্লাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে শক্ত অবস্থানে পৌঁছাতে না পারে সেজন্য ফেসবুকের কর্মীদের সে সময় বাড়তি খাটিয়ে নিয়েছেন জাকারবার্গ।’

আন্তোনিওর মতে, গুগল প্লাসের যাত্রা শুরু হওয়ার মুহূর্ত থেকেই জাকারবার্গ সেটি ধ্বংসের পরিকল্পনা শুরু করেন। তখন ফেসবুকের কর্মীদের প্রচুর বাড়তি কাজ করতে হয়েছে। এমনকি কর্মীদের অফিস ত্যাগ করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। কারণ তখন ফেসবুকের বেশ কিছু কারিগরি দিক নতুন করে সাজানো হচ্ছিল যাতে গুগল প্লাসকে টেক্কা দেওয়া যায়।

গুগল প্লাস যাত্রা শুরু করার দিন ফেসবুকের প্রধান কার্যালয়ে কর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন জাকারবার্গ। সেখানে তিনি বলেন, ‘যেকোনো মূল্যে গুগল প্লাসকে ধ্বংস করতে হবে’। এমনকি এই বিষয়টি কর্মীদের মাথার ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়ার জন্য ফেসবুকের অফিসজুড়ে পোস্টারিং পর্যন্ত করা হয়।

অবশ্য ফেসবুককে তখন এত শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নেয়নি গুগল প্লাস। কারণ তাদের ধারণা ছিল গুগল সার্চ ও জিমেইল অ্যাকাউন্টের কারণে তারা সহজেই জনপ্রিয় হবে।

কিন্তু প্রথম থেকেই গুগল প্লাসকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করেছেন জাকারবার্গ। তার কারণ হচ্ছে গুগল প্লাসে তখন কোনো বিজ্ঞাপনের যন্ত্রণা ছিল না, কিন্তু ফেসবুক ততদিনে বিজ্ঞাপন বিক্রি করা শুরু করেছিল।

বিষয়টি নিয়ে জাকারবার্গ এতই সিরিয়াস ছিলেন যে, সে সময় ফেসবুকের প্রকৌশলী ও কর্মীদের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়। সপ্তাহে টানা সাত দিনই তাদের কাজ করতে হতো। পাশাপাশি রাত জেগেও টানা কাজ করতে হয়েছে কর্মীদের।

এ রকমভাবে টানা পরিবার বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকার কারণে অনেক সময় পরিবারের সদস্যরাই ছুটির দিনে ফেসবুকের কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার পালো অল্টোতে অবস্থিত ফেসবুকের প্রধান কার্যালয়ে চলে যেতেন।

তবে শেষমেশ গুগল প্লাস খুব একটা আলোড়ন তৈরি করতে পারেনি। এক সময় গুগল প্লাসের কর্মীদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় গুগলের অ্যানড্রয়েড বিভাগে। এই খবরে স্বস্তি ফিরে আসে জাকারবার্গের মনে আর টানা অফিস করার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পান ফেসবুকের কর্মীরা।