এবার লক্ষ্য কৃষ্ণবস্তু
সার্নের লার্জ হার্ডন কোলাইডার (এলএইচসি) আবার চালু করা হচ্ছে। হিগস-বোসন কণা আবিষ্কার করা বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই অণু বিশ্লেষণ যন্ত্রটির শক্তি দ্বিগুণ করা হয়েছে। এলএইচসির এবারের লক্ষ্য কৃষ্ণবস্তু (ডার্ক ম্যাটার) আবিষ্কার। কৃষ্ণবস্তুর নিয়ে গবেষণার বিজ্ঞানে ‘নতুন যুগের সূচনা’ করবে বলে দাবি করছেন গবেষকরা।
এলএইচসি যন্ত্রটি ১৬ দশমিক ৭ মাইল দীর্ঘ বৃত্তাকার টানেলের মতো। যন্ত্রটি সুইজারল্যান্ড ও ফ্রান্স সীমান্তে মাটির নিচে অবস্থিত। এটি তৈরিতে ব্যয় হয়েছে ৩৭০ কেটি পাউন্ড। জেনেভায় অবস্থিত ইউরোপিয়ান অর্গানাইজেশন ফর নিউক্লিয়ার বিসার্চ এলএইচসি নিয়ন্ত্রণ করে।
যুক্তরাজ্যের সময় আজ রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৪টায়) লার্জ হার্ডন কোলাইডার চালু করার কথা। গবেষকরা এই সময় দুটি শক্তিশালী কণা যন্ত্রটির টানেলের মধ্যে প্রেরণ করবেন। তবে পুরোদমে গবেষণা শুরু হবে জুলাইয়ে।
দুই বছর আগে সার্নের লার্জ হার্ডন কোলাইডারের মাধ্যমে হিগস বোসন কণা আবিষ্কার হয়। তাত্ত্বিকভাবে হিগস বোসনের ব্যাখ্যা থাকলেও গত বছরই প্রথম এর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। হিগস-বোসন কোনো বস্তুর ভরের ব্যাখ্যা দেয়।
বর্তমানে সার্নের গবেষকদের লক্ষ্য আরো জটিল কিছু—কৃষ্ণবস্তু আবিষ্কার করা। এই বস্তুকে দেখা যায় না, ছোঁয়াও যায় না। মজার বিষয় হলো, মহাবিশ্বের ৮৪ শতাংশই কৃষ্ণবস্তু। এটি আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে মহাবিশ্বের গঠন সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যেতে পারে।
দুই বছর ধরে এলএইচসির উন্নয়ন করা হয়। বর্তমানে যন্ত্রটির শক্তি আগের তুলনায় দ্বিগুণ। বর্তমানে এলএইচসিতে ১৩ টেরা ইলেকট্রন ভোল্ট (টিইভি) ব্যবহার করা হবে। এর মাধ্যমেই হয়তো কৃষ্ণবস্তু সম্পর্কে জানা যাবে।
সার্নের গবেষক অরনাউড মার্সোলিয়ার বলেন, ‘এলএইচসি দিন-রাত চলবে। কখন পরীক্ষা শেষ হবে আমরা বলতে পারি না। দুই মাসেও পরীক্ষা শেষ হতে পারে। আবার তা দুই বছরও চলতে পারে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো, এবারই প্রথম দুই শক্তির মধ্যে সংঘর্ষ ঘটানো হচ্ছে।’
গবেষক অরনাউড বলেন, ‘হিগস-বোসন কণা পেতে আমাদের ৫০ বছর সময় লেগেছে। গবেষণার যন্ত্র তৈরি করতেই লেগেছে ২০ বছর। সার্নের এলএইচসি ২০৩৫ পর্যন্ত চলবে। তাই কৃষ্ণবস্তু নিয়ে গবেষণার জন্য যথেষ্ট সময় আছে।’