আসছে ফোরডি প্রিন্টিং
বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে থ্রিডি (ত্রিমাত্রিক) প্রিন্ট। এখনো চলছে এই প্রিন্টং পদ্ধতি উন্নয়নের গবেষণা। ত্রিমাত্রিক প্রিন্টিংয়ের জয়জয়কারের আরেক ধাপ এগিয়ে গেলেন গবেষকরা। আসছে ফোরডি (চতুর্মাত্রিক) প্রিন্ট। এই প্রিন্টারে তৈরি বস্তু প্রয়োজন অনুযায়ী আকৃতি ও কাজের পদ্ধতি পরিবর্তন করতে পারবে!
অস্ট্রেলিয়ার গবেষণা সংস্থা এআরসি সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর ইলেকট্রোম্যাটেরিয়ালস সায়েন্সের একদল গবেষক ফোরডি প্রিন্টার তৈরির গবেষণা করছেন। এখানে মনে রাখতে হবে, ফোরডি প্রিন্টিং বলতে এমন কোনো বস্তু তৈরি করা বোঝানো হচ্ছে না, যা সময় ও স্থানের সূত্রের সঙ্গে মিল রাখবে। বরং ফোরডি প্রিন্টিংয়ে এমন বস্তু তৈরি হবে যা তাপ, চাপ বা অন্য কোনো কারণে অবস্থা ও আকৃতির পরিবর্তন করতে পারবে। যেমন ফোরডি প্রিন্টারে এমন ভাল্ব তৈরি করা সম্ভব, যা শুধু গরম পানির প্রভাবে বন্ধ হবে।
গবেষকরা থ্রিডি ও ফোরডি প্রিন্টারের তুলনায় বলেন, থ্রিডিতে স্তরে স্তরে প্রিন্ট করে নির্দিষ্ট আকৃতি দেওয়া হয়। আর ফোরডি প্রিন্টারে নির্দিষ্ট আকৃতির বস্তু আবার আকৃতি পরিবর্তন করতে পারে।
গবেষকরা ফোরডি প্রিন্টারে তৈরি বস্তুকে শিশুদের লগো খেলনার সঙ্গে তুলনা করেন। লগো খেলনাতে ছোট ছোট চারকোনা প্লাটিকের বস্তুকে জোড়া লাগিয়ে একটি নির্দিষ্ট আকৃতি দেওয়া হয়।পরে আবার সেটি খুলে নতুন বস্তু বানানো যায়। ফোরডি প্রিন্টারের তৈরি কোনো বস্তুর একই রকম বৈশিষ্ট থাকবে। পরে ফোরডি প্রিন্টারে তৈরি বস্তু থেকে আরো বেশি বৈশিষ্ট যুক্ত হতে হবে বলে আশা করেন গবেষকরা।
থ্রিডি ও ফোরডি প্রিন্টারের আরেকটি বড় পার্থক্য হলো প্রিন্ট হওয়া বস্তুর গঠন। থ্রিডিতে প্রিন্ট কোনো বস্তুর আলাদা আলাদা অংশে প্রিন্ট হয়, যা পরবর্তী সময়ে জোড়া লাগাতে হয়। কিন্তু ফোরডিতে কোনো বস্তু তৈরি হলে প্রিন্টারে মধ্যেই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। বাইরে এনে যুক্ত করার প্রয়োজন হয় না।
গবেষকরা আশা করেন, ফোরডি প্রিন্টিং পদ্ধতি থেকে ‘নমনীয়’ রোবটিংয়ের পথে আগানো যাবে। এর ফলে জৈব বস্তুর মতো করে রোবট তৈরি সম্ভব হবে বলে মনে করেন গবেষকরা।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ফোরডি প্রিন্টিং নিয়ে গবেষণা এখনো চলমান। তাই কবে নাগাদ এটি সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে আসবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়।