ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য মোবাইল চার্জিং স্টেশন

Looks like you've blocked notifications!

ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যবহার বাড়াতে হলে চার্জ দেওয়ার স্টেশনের সংখ্যা বাড়াতে হবে। জার্মানিতে এই কাজটি ধীরে এগোচ্ছে। এই অবস্থায় এমই এনার্জি নামে বার্লিনের একটি স্টার্টআপ বিশ্বের প্রথম অফ-গ্রিড ফাস্ট চার্জিং স্টেশন তৈরি করেছে, যা নিজেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে৷ ফলে বিদ্যুতের জন্য গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রয়োজন হয় না।

এমই এনার্জির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইনেস আডলার একসময় ইন্টারনাল কম্বাশন ইঞ্জিন বানাতেন। এখন তিনি ই-মোবিলিটি খাত এগিয়ে নিতে তার জ্ঞান কাজে লাগাচ্ছেন। তিনি বলেন, ছয় টন ওজনের একটি বাক্সের মধ্যে একটা জেনারেটর থাকে, যেটা ইথানল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে।

প্রযুক্তিটির মেধাসত্ত্ব নেওয়া হয়েছে৷ চাহিদা অনেক। আগামী বছর উৎপাদন দ্বিগুণ করা হবে। ই-কারের ব্যবহার বাড়ানোর অন্যতম পূর্বশর্ত, চার্জ দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত স্টেশন থাকা। এ বছরের শেষ নাগাদ জার্মানির রাস্তায় প্রায় ১৫ লাখ ই-কার চলবে। কিন্তু চার্জিং পয়েন্ট আছে মাত্র ৯০ হাজারটি৷ ২০৩০ সালের মধ্যে ই-কারের সংখ্যা ১০ গুন বাড়ানো আর চার্জিং পয়েন্টের সংখ্যা ১০ লাখ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বাস্তবতা হয়ত ভিন্ন।

পিডাব্লিউসি জার্মানির ইলেকট্রোমোবিলিটি প্রধান হাইকো সাইটস বলছেন, ‘‘ভালো খবর হচ্ছে, আমাদের দেড় কোটির লক্ষ্য পূরণ হবে না৷ তাই আমাদের ১০ লাখ চার্জিং স্টেশনেরও প্রয়োজন হবে না- যদিও দেড় কোটি গাড়ির জন্য আসলে এতগুলো স্টেশনের প্রয়োজন ছিল না৷ আমরা হিসেব করে দেখেছি, এক কোটি ২০ লাখ গাড়ির জন্য প্রায় চার লাখ চার্জিং স্টেশন লাগবে৷''

অর্থাৎ ২০৩০ সাল নাগাদ চার লাখ চার্জিং স্টেশন প্রয়োজন হবে৷ তার মানে প্রতি সপ্তাহে গ্রিডে এক হাজার চার্জিং স্টেশন যুক্ত করতে হবে৷ কিন্তু এখন পর্যন্ত গতি খুব ধীর৷ কারণ পরিকল্পনাটি জটিল৷ আর সময়ও অনেক লাগছে৷ অনেক ক্ষেত্রে নেটওয়ার্কও শক্তিশালী করতে হচ্ছে। এসবের জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন- যা আরেকটি সমস্যা। চার্জিং পয়েন্ট সাধারণত শহর এলাকা বা মহাসড়কের পাশে বসানো হচ্ছে।

জনসংখ্যা কম এমন জায়গায় চার্জিং স্টেশনের সংখ্যা খুব কম। কারণ, ‘বিনিয়োগকারীরা সেখানেই বিনিয়োগ করেন যেখানে চার্জিং অবকাঠামো বসিয়ে সবচেয়ে বেশি লাভ করা যায়৷ জার্মানি হোক বা অন্য কোথাও, একটি দেশের সব জায়গায় সমান সংখ্যায় ইলেকট্রিক গাড়ি চলে না৷ তাই আমরা শুধু শহর এলাকাতেই বিনিয়োগ দেখছি,' বলেন পিডাব্লিউসি জার্মানির ইলেকট্রোমোবিলিটি প্রধান সাইটস।

স্টার্টআপের জন্য এটি একটি সুযোগ৷ শুরুতে তাদের ক্রেতাদের খুব বেশি বিনিয়োগ করতে হবে না। এমই এনার্জির সহ-প্রতিষ্ঠাতা আলেকজান্ডার সল বলেন, ‘এমন জায়গা আপনি সবসময় পাবেন যেখানে চার্জিং অবকাঠামো বসানো লাভজনক হবে না৷ আমাদের সুবিধা হচ্ছে, আমাদের স্টেশনগুলো ভাড়া দেয়া যায়৷ ক্রেতারা দুই, পাঁচ বা সাত বছরের জন্য ব্যবহার করতে পারেন৷ এরপর ফেরত দিতে পারেন৷ বা অন্য স্থানে নিয়ে যেতে পারেন৷।'

অন্য আরও অনেক পরিকল্পনা আছে। চার্জ শেষ হয়ে যাওয়া ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে চার্জপূর্ণ ব্যাটারি লাগানোর পরিকল্পনা করছে চীনা গাড়ি নির্মাতা নিও।

হাইকো সাইটস বলেন, ‘এসব পদ্ধতি কেবেল দিয়ে চার্জ করার বিকল্প নয়৷ বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি থাকার বিষয়টি ভালো৷ আমরা ভবিষ্যতের জন্য ইন্ডাকশনের কথাও বলছি৷ এতে আরও সময় লাগবে, তবে শুধু কেবেল দিয়ে চার্জ করার বাইরেও আরও কিছু থাকবে।’

প্রযুক্তিগতভাবে অনেককিছুই সম্ভব, কিন্তু কত তাড়াতাড়ি? এবং পরিবেশের উপর কেমন প্রভাব ফেলবে? ই-মোবিলিটি খাতে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন কমাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন দ্রুত পরিবেশবান্ধব করতে হবে৷ কারণ বর্তমানে মাত্র অর্ধেক বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে তৈরি হচ্ছে।