ভারতে জনপ্রিয় হচ্ছে ই-রিকশা

Looks like you've blocked notifications!

ভারতে বৈদ্যুতিক যানের জনপ্রিয়তা বাড়ছে৷ সরকারি নীতি, বেসরকারি ক্ষেত্রের উৎসাহ ও মানুষের মধ্যে পরিবেশ সম্পর্কে বেড়ে চলা সচেতনতা এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে।

প্রতিদিন বিশেষ করে ভারতের শহরাঞ্চলে জনসংখ্যা বেড়ে চলায় আরো বেশি রিকশাচালক নোংরা ডিজেল ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। ২০৫০ সালের মধ্যে শুধু যানের সংখ্যাই দ্বিগুণ হয়ে যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন। সেইসঙ্গে ইঞ্জিনের ধোঁয়াও বাড়বে।

ভারতের রাজপথে এখনো লাখ লাখ ডিজেলচালিত দুই চাকার যান চালু আছে। তা সত্ত্বেও ভারতে বিদ্যুতচালিত যানের বাজার বাড়ছে। গত অর্থবছরে প্রায় সাত লাখ ৩০ হাজার দুই চাকার ইলেকট্রিক যান বিক্রি হয়েছে। তার আগের বছরে সংখ্যাটা ছিল আড়াই লাখের সামান্য বেশি। বিশেষজ্ঞরা এই প্রবণতার জন্য কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছেন।

থিংকট্যাংক সিএসটিইপি-র প্রতিনিধি এনসি তিরুমালাই বলেন, ‘ভারতে এই বৃদ্ধির পেছনে আমি তিনটি কারণ দেখতে পাচ্ছি। প্রথমত জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার অঙ্গীকার এবং সরকারি নীতি আইসিই থেকে বৈদ্যুতিক যানের চল বাড়ানোর প্রবণতা তরান্বিত করেছে। আমার মতে অর্থনৈতিক কারণও কাজ করছে। তৃতীয় কারণ হলো ভারতের স্টার্টআপ কোম্পানিগুলো ইলেকট্রিক যান তৈরি করে এ ক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়িয়ে রূপান্তরের সূচনা ঘটিয়েছে।’

অনেক ক্ষেত্রে সহজ মডেল কাজে লাগানো হয়েছে। বড় বড় ব্যাটারি ব্লকের বদলে ছোট আকারের কম আয়ুর সেল ব্যবহার করা হয়েছে, যেগুলো অশোক চৌহানের মতো ড্রাইভারের পকেটের নাগালে পড়ে। তিনি বলেন, ‘চার চাকার যানে এক লিটারে কমপক্ষে ২০ কিলোমিটার যাওয়া যায়৷ এটির ক্ষেত্রে ৫০ থেকে ৬০ টাকা খরচ হয়৷ তা দিয়ে ১০০ কিলোমিটার চলবে।’

তিনি নতুন ইলেকট্রিক রিকশা কিনতে দোকানে গেছেন৷ তবে তিনি এখনো মনস্থির করতে পারছেন না৷ ভারত সরকার ইলেকট্রোমোবিলিটি ক্ষেত্রে বিশাল বিনিয়োগ করেছে এবং ক্রেতা ও বিক্রেতা দুই পক্ষকেই মদত দিচ্ছে৷ কোম্পানির প্রধান কুন্দন আদানা বলেন, ‘এমন এক যানের দাম আগে প্রায় তিন হাজার মার্কিন ডলারের মতো ছিল। কিন্তু সরকারি ভরতুকির কল্যাণে ক্রেতাদের এর অর্ধেক দাম দিতে হচ্ছে. যা তেলচালিত গাড়ির তুলনায়ও কম।’

প্রথম দর্শনে চোখে না পড়লেও বিনোদ সৈনের গাড়ির সিটের নীচে ব্যাটারি রাখা রয়েছে। সেই ইলেকট্রিক রিকশা তাঁর জন্য সত্যি এক সম্পদ। অশোক চৌহান নতুন যান চালিয়ে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন। এখন তিনি নতুন এক বৈদ্যুতিক যান কিনতে চান। এই দোকানে মাসে প্রায় ২০০ যান বিক্রি হয়।

কোম্পানির প্রধান হিসেবে কুন্দন আদানা আরো নতুন কর্মী নিয়োগ করতে চান৷ তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায় দশ বছর ধরে ব্যবসা করছি এবং আমাদের বাৎসরিক বৃদ্ধি বেশ ভালো৷ কোভিডের পর গত দুই বছরে এই শিল্পখাতে অভাবনীয় বৃদ্ধি ঘটেছে৷ ইলেকট্রিক মোবিলিটির প্রতি মানুষের ঝোঁক বাড়ছে৷ ভবিষ্যতেও আমি বিশাল সাফল্যের আশা করছি।’

ভারতে অনেক কোম্পানি সেই পথেই এগোচ্ছে। ফলে বিনোদ সৈনের মতো আরো বেশি মানুষ স্বনির্ভর হয়ে উঠছেন। সেইসঙ্গে পরিবেশ দূষণের মাত্রাও কমছে।