আজ থেকে তিন দিনব্যাপী নজরুলজয়ন্তী শুরু

Looks like you've blocked notifications!
কবি কাজী নজরুল ইসলাম। ছবি : সংগৃহীত

আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ, বুধবার। বিদ্রোহের দাবানল হয়ে অগ্নিবীণা হাতে ধূমকেতুর মতো এ দিনটিতেই বাংলার সাহিত্যাকাশে আবির্ভাব ঘটেছিল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের। তার শব্দবারুদ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামে অনুরেপ্ররণা যুগিয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন আন্দোলন ও সংগ্রামে ভূমিকা রেখে চলেছে। তাঁর ১২৩তম জন্মবার্ষিকীতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নেওয়া তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি শুরু হচ্ছে আজ। নজরুল জন্মজয়ন্তীতে এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে—বিদ্রোহী কবিতার শতবর্ষ।

এ বছর জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান হবে নজরুল স্মৃতিবিজড়িত কুমিল্লায়। কুমিল্লার বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে (টাউন হল) সকাল ১১টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল সাড়ে ৬টায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ ও সচিব মো. আবুল মনসুরের নেতৃত্বে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, কবি নজরুল ইনস্টিটিউটসহ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থা কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে।

পরে কুমিল্লার মূল অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী। সেখানে তাঁর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি, কুমিল্লার সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহার ও কবিপৌত্রী খিলখিল কাজী।

স্বাগত বক্তব্য দেবেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেবেন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও নজরুল গবেষক শান্তিরঞ্জন ভৌমিক এবং কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান।

দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহার এবং বিশেষ অতিথি থাকবেন কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রশাসক রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) আবু তাহের। নজরুল স্মারক বক্তা করবেন কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ জাকীর হোসেন। নজরুল স্মারক বক্তৃতা করবেন লেখক, নজরুল গবেষক এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান এ এফ এম হায়াতুল্লাহ।

আজ বুধবার রাজধানীর ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট আয়োজন করেছে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি ও উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কবি কামাল চৌধুরী। সভাপতিত্ব করবেন কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ জাকীর হোসেন।

অন্যদিকে, ঢাকাসহ জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশাল কুমিল্লার দৌলতপুর, মানিকগঞ্জের তেওতা, চুয়াডাঙ্গার কার্পাসডাঙ্গা এবং চট্টগ্রামে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষে নজরুল মেলা, নজরুল বিষয়ক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে স্থানীয় প্রশাসন।

এসব কর্মসূচির অংশ হিসেবে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার দরিরামপুরে জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার প্রথম দিনের আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আশরাফ আলী খান খসরু এবং বিশেষ অতিথি থাকবেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. হাফেজ রুহুল আমীন মাদানী।

নজরুল স্মারক বক্তা থাকবেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. শামসুদ্দিন চৌধুরী। দ্বিতীয় দিনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল উপস্থিত থাকবেন। নজরুল স্মারক বক্তা থাকবেন লেখক ও নজরুল গবেষক এ এফ এম হায়াতুল্লাহ।

সমাপনী দিনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন। নজরুল স্মারক বক্তা থাকবেন লেখক ও নজরুল গবেষক এবং জাতীয় কবির দৌহিত্রী খিলখিল কাজী।

এদিকে, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন।

নজরুল জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জাতীয় পর্যায়ের মূল অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানসমূহে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এসব স্থানের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ ছাড়া  কবির স্মৃতিবিজড়িত জেলাসমূহসহ সকল জেলায় জাতীয় কবির ছবি, কবিতা, পরিচিতি ও চিত্রকর্ম প্রদর্শন এবং বিভিন্ন সড়কে ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার ও ডিজিটাল ডিসপ্লে স্থাপন এবং আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হবে।