কোটালীপাড়ায় তিন দিনব্যাপী কবি সুকান্ত মেলা শুরু

Looks like you've blocked notifications!
জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদীপ প্রজ্জ্বালন করে সুকান্ত মেলার উদ্বোধন করেন। ছবি : সংগৃহীত

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী কবি সুকান্ত মেলা। আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের উনশিয়া গ্রামে কবির পৈতৃক বাড়িতে এ মেলা শুরু হয়। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন এ মেলার আয়োজন করে।

মেলা সকালে অনানুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলেও সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদীপ প্রজ্জ্বালন করে মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

এ সময় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ, শেখ হাসিনা আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার ভাবুক, কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিল্লুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান লক্ষ্মী সরকার, অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদার, পিঞ্জুরি ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুজ্জামান খান মিলন, বান্ধাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান হাওলাদার মানিক, কলাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট বিজন বিশ্বাস, আমতলী ইউপি চেয়ারম্যান রাফেজা বেগম, কান্দি ইউপি চেয়ারম্যান তুষার মধু, উদীচী কোটালীপাড়া শাখার সভাপতি অশোক কর্মকার, সাধারণ সম্পাদক রতন সেন কংকন, কবি মিন্টু রায় উপস্থিত ছিলেন।

সুকান্ত মেলায় জ্ঞানের আলো পাঠাগারের স্টলে বই কিনতে ক্রেতাদের ভিড়। ছবি : সংগৃহীত

মেলায় গ্রামীণ মেলার একটি আবহ থাকলেও এবার যুক্ত হয়েছে বইয়ের স্টল। জ্ঞানের আলো পাঠাগার এলাকাবাসীকে বইমুখী করার উদ্যোগ হিসেবে ২০ থেকে ৪০ শতাংশ ছাড়ে বই বিক্রি করছে। এছাড়া প্রতিদিন বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে থাকছে জারি গান, লোকসংগীত, বাউল গান ও গণসংগীত।

মেলা নিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের আদর্শকে বর্তমান যুব সমাজের মাঝে ছড়িয়ে দিতে, এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। আশা করি এই মেলার মধ্যে দিয়ে কিছুটা হলেও কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যকে বাঙালি জাতি বা আগামী প্রজন্মের কাছে আমরা তুলে ধরতে পারব। তিনি আরও বলেন, প্রতি বছর পাঁচ দিনব্যাপী মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর করোনার কারণে আমরা স্বল্প পরিসরে তিন দিনের জন্য এ মেলার আয়োজন করেছি।

বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিশুসাহিত্যিক ও কোটালীপাড়ার বাসিন্দা খালেক বিন জয়েনউদদীন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, কবি সুকান্তকে নিয়ে আমরা কোটালীপাড়ার মানুষ গর্ব করি। ১০ বছর ধরে কবির পৈতৃক বাড়িতে মেলার আয়োজন করায় আমি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই। একই সঙ্গে আমি আগামীতে এই মেলার আরও বৈচিত্র্য প্রত্যাশা করি।

কথাসাহিত্যিক অরুণ কুমার বিশ্বাস এনটিভি অনলাইনকে বলেন, কবি সুকান্ত ও তাঁর কবিতার চেতনাকে ধারণ করে, এমন তরুণ কবিদের সুকান্তের নামে পুরস্কার দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। পাশাপাশি কবির কবিতা ও জীবনদর্শন নিয়ে গবেষণা ও প্রকাশনা এবং তা তরুণ প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা দরকার। তাতে এই মেলার ঔজ্জ্বল্য যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি সময়োপযোগীতা ও আবশ্যকতা আরও বাড়বে বলে আমার বিশ্বাস।

উল্লেখ্য, ১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য কলকাতার কালীঘাটের মহিমা হালদার স্ট্রিটে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম নিবারণ ভট্টাচার্য। মা সুনীতি দেবী। ১৯৪৭ সালের ১৩ মে মাত্র ২১ বছর বয়সে মারা যান সুকান্ত। ‘ছাড়পত্র’, ‘ঘুম নেই’, ‘পূর্বাভাস’, ‘অভিযান’, ‘হরতাল’- তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। কবির প্রতিটি কবিতায় অনাচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে।