রাবিতে জমে উঠেছে ‘চিহ্নমেলা’র পঞ্চম আসর
সাহিত্যের ছোট কাগজ ‘চিহ্ন’র আয়োজনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) জমে উঠেছে ‘চিহ্নমেলা মুক্তবাঙলা ২০২২’ উৎসব। আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে দুই দিনব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেন ভারতের লিটলম্যাগব্যক্তিত্ব সন্দীপ দত্ত। উদ্বোধনকালে জাতীয় সংগীত পরিবেশন, পতাকা উত্তোলন ও বেলুন-ফেস্টুন উড়ানো হয়। পরবর্তীতে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এসময় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেন, চিহ্নের এমন আয়োজনে মনে পড়ছে রবীন্দ্রনাথের সেই গান ‘পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে’, এই চিহ্ন না পড়া তিনি নেতিবাচক অর্থে বলেছেন। এখানে চিহ্নমেলার যে চিহ্ন সেটা ইতিবাচক অর্থে। এখানে আমরা এই মেলার মধ্য দিয়ে ভালোবাসার চিহ্ন, প্রতিবাদের চিহ্ন ও সংগ্রামের চিহ্ন রেখে দিতে চাই। কবি রবীন্দ্রনাথ যে কথা বলেছেন পড়বে না মোর চিহ্ন, সেটা এখানে বলা যায় প্রত্যয়ের, প্রতিজ্ঞার, প্রতিশ্রুতি, ভালোবাসার, বিপ্লবের ও অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রামের চিহ্ন। এসব চিহ্ন আমাদের মাঝে নতুন প্রাণের ও প্রেরণার সঞ্চার করুক, অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শক্তি যোগান দিক, এ আশাবাদ ব্যক্ত করি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, এই মেলার মাধ্যমে আমরা প্রাকৃতিক ভূগোলকে অতিক্রম করে ভাষার ভূগোলে এক হয়েছি। ‘চিহ্নমেলা’ বাংলাভাষী লেখক-পাঠকদের মহামিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।
মেলায় আগত লেখক-পাঠকদের ঘুরে দেখার আমন্ত্রণ জানিয়ে উপাচার্য আরও বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিটি পরতে পরতে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে আছে। আমাদের আছে শহীদ জোহা স্যার, বিভিন্ন প্রতিবাদী ম্যুরাল, যেখানে আমরা স্বাধীনতাকে বারবার শাণিত করি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম, অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা, অধ্যাপক জুলফিকার মতিন, চিহ্ন’র সম্পাদক অধ্যাপক শহীদ ইকবাল প্রমুখ।
দুদিনব্যাপী এ মেলায় বাংলাদেশের ১০৫টি এবং ভারতের ৬৫টি পত্রিকা অংশগ্রহণ করছে। এবারের মেলায় লিটলম্যাগ-সম্মাননা পাচ্ছে চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত আলী প্রয়াসের ‘তৃতীয় চোখ’ এবং কলকাতা থেকে প্রকাশিত অমলেন্দু বিশ্বাসের ‘নৌকো’ লিটলম্যাগ। এবারে চিহ্ন সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন কথাসাহিত্যিক হামিদ কায়সার। চিহ্ন সারস্বত-সম্মাননায় ভূষিত হচ্ছেন প্রবীণ সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ জুলফিকার মতিন।