লা গ্যালারিতে চলছে শিল্পী আবদুল্লাহ আল বশিরের চিত্রকর্ম প্রদর্শনী

Looks like you've blocked notifications!
চিত্রকর্ম প্রদর্শনীতে দর্শক। ছবি : সংগৃহীত

আলিয়াঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার লা গ্যালারিতে শুরু হলো শিল্পী আবদুল্লাহ আল বশিরের ‘ইভোলিউশন’ শীর্ষক চিত্রকর্ম প্রদর্শনী।

গতকাল শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এ. এস. এম. মাকসুদ কামাল, বিশিষ্ট শিল্পী অধ্যাপক সৈয়দ আবুল বারক আলভী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রিন্টমেকিং বিভাগের অধ্যাপক আনিসুজ্জামান আনিসের উপস্থিতিতে প্রদর্শনীটির উদ্বোধন হয়।

আবদুল্লাহ আল বশির (জন্ম ১৯৮৩) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের, প্রিন্টমেকিং বিভাগ থেকে ২০০৯ সালে বিএফএ এবং ২০১০ সালে এমএফএ উভয় ক্ষেত্রেই প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করেন। স্নাতকোত্তর শেষ করার পর বৃত্তি নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য চীনের ইয়ানান আর্টস ইউনিভার্সিটিতে যান, যেখানে তিনি তাঁর উডকাট প্রিন্ট-এর (২০২০) জন্য সেই সময়ে ‘অল মিডিয়া বেস্ট অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছিলেন। তাঁর শিক্ষাজীবনে তিনি পাঁচটি বৃত্তি অর্জন করেছেন।

শিল্পী তাঁর পারিপার্শ্বিক বিষয়বস্তু, প্রকৃতি, কর্মময় জীবন এবং সবকিছুর দ্বারা আকৃষ্ট হন এবং তাঁর চারপাশের জিনিসগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন, যা তার কাজে প্রতিফলিত হয়। তাঁর রিলিফ, ইন্টাগ্লিও এবং লিথোগ্রাফির মতো বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মুদ্রণ শিল্পে দুর্দান্ত দক্ষতা রয়েছে, যা খুব কমই দেখা যায়। তিনি উডকাট, ওয়াটার কালার, এচিং বা ড্রয়িংয়ের মতো মিডিয়াতেই শুধু সীমাবদ্ধ নন। তিনি একজন বহুমুখী শিল্পী, তাঁর সমস্ত মিডিয়াতেই দক্ষতা রয়েছে । প্রতিটি মাধ্যমে পারদর্শী হওয়ায় তিনি সবকিছুই নিখুঁতভাবে করেন। তার হাইপার-রিয়ালিস্টিক জলরং হাতেগোনা কয়েক জন শিল্পীর কাজের মধ্যে দেখা যায়।

উডকাট প্রিন্টের প্রতি তাঁর অনুরক্তি লক্ষণীয়। তিনি একাধিক প্লেটে বিশাল উডকাট ব্লকে কাজ করেছেন, যা খুবই জটিল এবং অনন্য কৌশল। বশির বাংলাদেশে জাহাজ ভাঙার প্রক্রিয়া এবং এর পরিবেশগত বিপর্যয় লক্ষ করে তাঁর শৈল্পিক দায়বদ্ধতার দিক থেকে তিনি এই ধারাবাহিক কাজগুলোকে চিত্রিত করেছেন। জাহাজটি ভবিষ্যতের জন্য গভীর সুযোগ, স্বপ্ন এবং আশা বহন করে। তিনি বিশ্বাস করেন, জাহাজটি এক দিন উপযুক্ত নেতৃত্ব বা অধিনায়কের নির্দেশে কাজ করবে এবং জিনিসগুলোকে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য একটি সঠিক পদক্ষেপ নেবে। তিনি চীনের কিছু শিল্পীর কাজ দেখে এবং তাদের সান্নিধ্যে অনুপ্রাণিত হয়ে এই ধরনের হাইপার-রিয়ালিস্টিক কাজের প্রতি আকৃষ্ট হন।

এবারের প্রদর্শনীতে রয়েছে তাঁর উডকাট প্রিন্টের। তাঁর পরীক্ষা ও গবেষণামূলক প্রতিটি কাজেই বিশদ বিবরণ এবং রঙের ব্যবহার লক্ষ্যণীয়। কাজগুলোর রঙের ক্ষেত্রে পরিপক্কতা তুলনাহীন। তিনি এই ধারাবাহিক শিল্পকর্মে রূপকভাবে ‘জাহাজ’ ব্যবহার করেছেন। এখানে তিনি মহাবিশ্ব, রাষ্ট্র, সমাজ এবং নিজের আত্মকে সেই জাহাজের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন যা ভেঙে পড়ে এবং এখন স্থির।

এটি তাঁর দ্বিতীয় একক প্রদর্শনী। প্রথমটি ২০১১ সালে জয়নুল গ্যালারিতে ‘ভিউয়িং ডেপথ’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তিনি প্রায় ৪১টি গ্রুপ প্রদর্শনী করেছেন।

প্রদর্শনীটি চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সোমবার থেকে শনিবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রদর্শনীটি খোলা থাকবে। সাপ্তাহিক বন্ধ রোববার; প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত।