শিশু-কিশোরদের ‘অংকনে একুশ’

Looks like you've blocked notifications!

বিশাল মিলনায়তনের মেঝেতে সারিবদ্ধভাবে বসে নিবিষ্ট মনে ছবি আঁকছে সহস্রাধিক শিশু-কিশোর। কোনোরকম হৈচৈ কিংবা হুল্লোড় নেই। যেন সকলেই সুশৃঙ্খলতার প্রতীক। যেসব ছবিতে রঙের ব্যবহারের ভিন্নতা থাকলেও বিষয়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে অমর একুশের আবহ।

উল্লেখিত দৃশ্যকল্পই চিত্রিত ছিল রাজধানীর জিগাতলার বিজিবি সম্ভারের ব্যাংকোয়েট হলে অনুষ্ঠিত ‘অংকনে একুশ ২০২০’ শিরোনামের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায়।

নতুন প্রজন্মের মাঝে বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও একুশের চেতনা সঞ্চারের উদ্দেশে ব্রাদার্স ফার্নিচার লিমিটেডের আয়োজনে গতকাল শুক্রবার এই চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে চারটি বিভাগে বিভক্ত হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলের শিশু শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণির প্রায় এক হাজার ১০০ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।

সকাল ৯টায় প্রতিযোগিতা শুরু হয় এবং শেষ হয় ঠিক দেড়টায়। এরপর মধ্যাহ্ন বিরতি শেষে বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা ও পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্রাদার্স ফার্নিচার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াস সরকার, পরিচালক শরিফুজ্জামান সরকার ও প্রতিযোগিতার পরিচালনা প্রধান ও বাংলাদেশ আর্টিস ক্লাবের সভাপতি শিল্পী সঞ্জীব দাস অপু।

প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় এমন কোননো প্রকার মানদণ্ড না রেখে এ প্রতিযোগিতা থেকে শিল্পী সঞ্জীব দাস অপুর নেতৃত্বে ১৩ জন বিচারক প্রতি বিভাগে তিনজন করে মোট ১২ জনকে সেরা আঁকিয়ে নির্বাচন করেন। এর মধ্যে ক-বিভাগে সেরা তিনজন হলেন—আফরা নাওয়ারা  সিরাজী, অনুভা হালদার ও প্রকৃতি। খ-বিভাগে সেরা তিনের পুরস্কার জিতেছেন—তাইয়্যিবা রহমান, মিসরাত মাহদি ও খন্দকার তাহাজিবা। গ-বিভাগের সেরা তিন অর্জন করেছেন—স্বস্তি চৌধুরী, অধরা চক্রবর্তী ও আনিশা সান্তনি। ঘ-বিভাগে সেরা জয়ীরা হলেন—পিদিম রায়, আবির রায় চৌধুরী ও মাশহুন জাহান চৌধুরী। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারী সব শিক্ষার্থীর মাঝে বিতরণ করা হয় সনদপত্র।

শিশু-কিশোরদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়ে শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার বলেন, ‘এখন দেশে বিভিন্ন সংগঠন ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা করে, সেখানে অনেকে অংশ নেয়। আজকের এ আয়োজনটা খুব ভালো হয়েছে। এমন আনন্দঘন আয়োজনে যারা ভিড়ের মধ্যে ছবি এঁকে পুরস্কার পেয়েছ, কিংবা যারা পাওনি, সবাইকে অভিবাদন।’

মুস্তাফা মনোয়ার আরো বলেন, ‘আমি ভিড়ের মধ্যে কোনোদিন ছবি আঁকিনি। ভিড়ের মধ্যে আমি ছবি আঁকতে পারি না, ছবি ভালোও হয় না। তোমাদের এখন দুরকমভাবে ছবি আঁকতে হবে। এক রকম হলো, এরকম ভিড়ের মধ্যে এবং অন্যরকমটা হলো, বাড়িতে একা একা মাকে সঙ্গে নিয়ে ছবি আঁকতে হবে। কারণ মায়ের সঙ্গেই শিশুরা সবচেয়ে ভালো শিখতে পারে, আঁকতে পারে। তবে, সত্যিকারের ভালো ছবি আঁকতে হলে নিরিবিলি বসে ছবি আঁকতে হবে।’

আয়োজনের প্রধান সমন্বয়ক জাহিরুল হাসান জুয়েল জানান, এ প্রতিযোগিতায় দেড় হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেছিল।