সাংস্কৃতিক জাগরণের বিকল্প নেই : আবুল মোমেন
বাংলা একাডেমির ৬৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল গত ৩ ডিসেম্বর। একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের প্রয়াণে নির্ধারিত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তৃতা ৩ ডিসেম্বরের পরিবর্তে আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়।
আজ বিকেল ৩টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে একুশে ও মুক্তিযুদ্ধ : চেতনা ও বেদনার কথা শীর্ষক প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তৃতা প্রদান করেন লেখক, গবেষক আবুল মোমেন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলা একাডেমি এ তথ্য জানিয়েছে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ দেশের বাইরে থাকায় তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করা হয়। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর। স্বাগত ভাষণ দেন বাংলা একাডেমির সচিব এ. এইচ. এম. লোকমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা।
একক বক্তা আবুল মোমেন বলেন, আজ সমাজের দিকে তাকালে একুশ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং চাহিদার বাস্তবায়নের বদলে দিগ্ভ্রষ্টতা, দেশ-মানুষ-ইতিহাসের প্রতি দায়বদ্ধতার অনটন দেখতে পাই। অনেক উন্নতির মধ্যেও নৈতিক অবক্ষয়, সমাজের চিন্তার জড়তা ও পশ্চাৎগামিতা, উদার মানবিক চেতনার পরাভব আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সাংস্কৃতিক জাগরণের কোনো বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কে এম খালিদ এমপি বলেন, ১৯৫৫ সালের ৩ ডিসেম্বর বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সুরক্ষা ও বিকাশের জন্য। ছেষট্টি বছর পেরিয়ে এ-কথা দৃপ্তকণ্ঠে উচ্চারণ করতে পারি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সুরক্ষা বিধানের একাডেমিক দায়িত্ব পেরিয়ে বাংলা একাডেমি আজ আক্ষরিক অর্থেই বাঙালি জাতিসত্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের প্রতীক-প্রতিষ্ঠান। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমাজ ও স্বদেশ বিনির্মাণে বাংলা একাডেমির কর্মকাণ্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মো. আবুল মনসুর বলেন, বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠার পেছনে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিকাশের যে স্বপ্নপ্রেরণা কাজ করেছে তার পুরোপুরি বাস্তবায়নে আমাদের আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, প্রায় সাত দশকের পরিক্রমায় বাংলা একাডেমি আজ এক আলোক-বৃক্ষের নাম। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যত দিন বাংলাদেশ স্থিত থাকবে, তত দিনই বাংলা একাডেমি প্রকৃত মহিমায় উজ্জ্বল থাকবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ, সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সাবেক পরিচালক নূরুল ইসলাম, অধ্যাপক শওকত আরা হোসেন, কবি মাহবুব সাদিক, কবি আসাদ মান্নান, কবি মিনার মনসুর, কবি ফারুক মাহমুদ, কথাসাহিত্যিক ঝর্না রহমান প্রমুখ। সন্ধ্যায় ছিল বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।