সিনেমার ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে...

Looks like you've blocked notifications!
প্রতীকী ছবি

কিছুদিন আগে হলিউড অভিনেত্রী শ্যারন স্টোন অভিযোগ করেছেন, ১৯৯২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বেসিক ইনস্টিংক্ট’ সিনেমার সেই আলোচিত-সমালোচিত দৃশ্য ধারণের সময় তাঁর অন্তর্বাস খুলতে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া হয়েছিল। ওই দৃশ্যে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের সময় শ্যারন স্টোনকে ‘ক্রসলেগ’ (পায়ের ওপর পা তুলে বসা) ভঙ্গি থেকে পা নামিয়ে নিতে দেখা যায়, আর তাতেই ঘটে বিপত্তি।

সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ৬২ বছর বয়সী শ্যারন স্টোনের লেখা আত্মজীবনী ‘দ্য বিউটি অব লাভিং টোয়াইস’। সেখানে নিজের ক্যারিয়ারসহ ব্যক্তিগত জীবনের নানা অজানা অধ্যায়ের কথা লিখেছেন শ্যারন।

সম্প্রতি প্রকাশিত ওই স্মৃতিকথায় শ্যারন স্টোন লিখেছেন যে, সিনেমার ওই অংশের শুটের সময় তাঁকে অন্তর্বাস খুলতে বলা হয়েছিল; কারণ ‘সাদা রঙে ক্যামেরার আলো প্রতিফলিত হচ্ছে’। এ সময় অভিনেত্রীকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল যে (আপত্তিকর) ‘কিছুই দেখা যাচ্ছে না।’

এরপর বাকিটা ইতিহাস। সিনেমা মুক্তি পাওয়ার পর দেখা গেল, আসলে ‘কিছু’ নয়, অনেক কিছুই দেখা যাচ্ছে। এবং এ নিয়ে কম হ্যাপা হয়নি। পরিচালককে থাপ্পড়ও মেরেছিলেন শ্যারন।

অন্যদিকে, সিনেমার পরিচালক পল ভারহোভেন শ্যারনের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে উল্টো দাবি করেছেন, কী ঘটছে সে সম্পর্কে অভিনেত্রী পুরোপুরি ওয়াকিবহাল ছিলেন। এমনকি শ্যারনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করারও অভিযোগ করেন পরিচালক পল।

কিন্তু শ্যারন স্টোন বলছেন, তাঁর সঙ্গে যা ঘটেছে তা হেনস্তার শামিল এবং ঘটনাটি তাঁকে প্রায় শেষ করে দিয়েছিল।

শ্যারন স্টোনের অভিনয়জীবনের এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কি চাইলে এড়ানো যেত? ‘অনায়াসে’ এড়ানো যেত, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির ওই প্রশ্নের জবাবে বলছেন ভারতের প্রথম ও একমাত্র সার্টিফায়েড ‘ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটর’ বা ‘ঘনিষ্ঠ দৃশ্য সমন্বয়কারী’ আস্থা খান্না। তিনি বলেন, ‘আমি যদি সেখানে থাকতাম, তাহলে আমি তাঁকে (শ্যারন স্টোন) ত্বক-রঙা (স্কিন-কালারড) অন্তর্বাস পরতে বলতাম।’

একজন ‘ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটর’-এর কাজ হলো অভিনয়শিল্পীদের নগ্ন ও যৌনদৃশ্য ধারণের সময় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে সহায়তা করা। কিন্তু, ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে যখন ‘বেসিক ইনস্টিংক্ট’ শুট করা হয়, সে সময় শুটিং স্পটে ঘনিষ্ঠ দৃশ্য সমন্বয়কারী রাখার কথা কে-ই বা ভেবেছিল!

তবে ২০১৭ সাল থেকে হ্যাশট্যাগ ‘মি টু’ আন্দোলনের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে বিনোদনজগতে ব্যাপক যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের বহু ঘটনা একের পর এক সামনে আসতে থাকায় বর্তমানে ইন্ড্রাস্ট্রিতে ‘ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটর’-এর চাহিদা ও কদর বাড়ছে।  

সর্বপ্রথম ২০১৮ সালে এইচবিও ঘোষণা দেয়, তারা অভিনেত্রী এমিলি মিডের অনুরোধে ‘দ্য ডিউস’ সিরিজের জন্য একজন ঘনিষ্ঠ দৃশ্য সমন্বয়কারীকে নিয়োগ দিয়েছে। ১৯৭০-এর দশকে নিউইয়র্কের যৌনতা ও পর্ন শিল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘দ্য ডিউস’ সিরিজটি। কেবল তা-ই নয়, এইচবিও পরে ঘোষণা দিয়েছিল, ঘনিষ্ঠ দৃশ্য সংবলিত তাদের সব প্রোগ্রামেই একজন ‘অন্তরঙ্গতা সমন্বয়কারী’ বা ‘ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটর’ থাকবেন। এইচবিওর এমন পদক্ষেপের পর পরই নেটফ্লিক্স, অ্যামাজনসহ অন্যান্য প্ল্যাটফর্মগুলোও একই পথে হাঁটে।

সেই থেকে বেশ কয়েকটি স্টুডিওসহ একাধিক প্রযোজক ও পরিচালক তাঁদের শুটিং সেটে একজন ‘ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটর’ রাখা শুরু করেছেন। গত কয়েক মাসে এই পরিবর্তনের বাতাস  পৌঁছেছে ভারতেও।

ছাব্বিশ বছর বয়সী আস্থা খান্না বলছেন, তাঁর কাজের সঙ্গে একজন ‘অ্যাকশন ডিরেক্টর’ বা ‘নৃত্য পরিচালক’-এর কাজের তুলনা করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে তাঁর কাজ হলো অন্তরঙ্গ দৃশ্য ব্যবস্থাপনার দেখভাল করা।

আস্থা খান্না বলেন, ‘একজন অ্যাকশন ডিরেক্টর যেমন স্টান্টের সময় সংশ্লিষ্টদের সুরক্ষা নিশ্চিত করেন, তেমনি এক অন্তরঙ্গ দৃশ্য সমন্বয়কের কাজ হলো সিমুলেটেড যৌনতা, নগ্নতা ও যৌন সহিংসতা থাকে—এমন দৃশ্যগুলো ধারণের সময় সুরক্ষা নিশ্চিত করা।’ পরিচালক ও অভিনয় শিল্পীদের মধ্যে যোগসূত্র হিসেবে কাজ করেন অন্তরঙ্গ দৃশ্য সমন্বয়কারী, ব্যাখ্যা করেন আস্থা খান্না। 

‘আমার কাজটি হলো অভিনয়শিল্পীরা যাতে কোনো ধরনের দুর্ভোগের শিকার না হন এবং একইসঙ্গে স্টুডিওগুলোও যাতে কোনো বিপাকে না পড়ে তা নিশ্চিত করা। যেন কোনো অভিনয়শিল্পী পাঁচ বছর পর বলতে না পারেন যে তাদের খারাপ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল।’

ভারতের প্রথম ও একমাত্র সার্টিফায়েড ‘ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটর’ বা ‘ঘনিষ্ঠ দৃশ্য সমন্বয়কারী’ আস্থা খান্না। ছবি : সংগৃহীত

অভিনয়শিল্পীদের ক্ষেত্রে আস্থা খান্না কাজের সম্মতি ও সীমানা বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেন; আর সেটে তাঁর সঙ্গে থাকে ‘বাধা ও সীমানা নির্ধারক বিশেষ পোশাক’।

আস্থা খান্নার কিটে সবস ময় ক্রোচ গার্ডস, নিপল প্যাসটিস, আঁঠালো বডি টেপ এবং ডোনাট বালিশ (যৌনদৃশ্যে অভিনয়ের সময় যেন শিল্পীদের যৌনাঙ্গ স্পর্শ না করে তা নিশ্চিত করতে ব্যবহৃত হয়) থাকে।

ঋতুস্রাববিষয়ক একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের জন্য অস্কারজয়ী প্রযোজক মন্দাকিনি কাকার তাঁর পরবর্তী ‘পুরোপুরি ঘনিষ্ঠতাভিত্তিক’ প্রকল্পের জন্য আস্থা খান্নার সহায়তা নিচ্ছেন। মন্দাকিনি কাকার বলেন, ভারতের মূলধারার সিনেমাগুলো ঐতিহ্যগতভাবে যৌনতা ও নগ্নতা এড়িয়ে চলেছে—এমনকি চুম্বন দৃশ্যও সিনেমায় নিষিদ্ধ ছিল। এ বিষয়ে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের ভাষ্য—সপরিবারে দেখা যায় না, এমন ছবি বানাতে চান না তাঁরা।

কঠোর সরকারি বিধিনিষেধ এবং সেন্সর বোর্ডের কড়া পাহারা থাকায় বলিউডের সিনেমাগুলো ফুলে ফুলে স্পর্শ বা পাখিদের চুম্বন কিংবা উত্তাল আবেগ বোঝানোর জন্য উথলানো দুধের পাত্র এবং শারীরিক সম্পর্ক বোঝানোর জন্য আলুথালু বিছানা দেখিয়ে যৌনতা ও শারীরিক ঘনিষ্ঠতা বোঝানোর সৃজনশীল কায়দা খুঁজে নিয়েছিল।

ভারতীয় চলচ্চিত্রে চুম্বনদৃশ্য দেখা যাচ্ছে গত দু-এক দশক ধরেই। তবে সময়ের সঙ্গে দর্শক চাহিদা এবং স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলোর জনপ্রিয়তা বাড়ায় ভারতীয় পর্দায় এখন যৌনতা ও নগ্নতার দেখা মিলছে।

তবে এসব অন্তরঙ্গ দৃশ্যে অংশ নেওয়া শিল্পীদের জন্য, বিশেষ করে কমবয়সী নারীদের জন্য শুটিং সেটে ধাতস্ত হওয়া বেশ কঠিন হয়ে উঠতে পারে, যা তাঁদের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।

মডেল থেকে অভিনেত্রী হওয়া অঞ্জলি শিবরমন সম্প্রতি ‘এলিট’ নামের একটি নেটফ্লিক্স সিরিজের শুটিং শুরু করেছেন। তিনি জানান, সেটে আস্থা খান্নার উপস্থিতি ছিল তাঁর জন্য দারুণ স্বস্তিদায়ক।

‘আমার আশ্বস্ত লাগছিল এই ভেবে যে, আমার দেখভালের জন্য কেউ সেটে আছেন,’ বলছিলেন অঞ্জলি।

‘আমি এর আগে কখনও যৌন দৃশ্যে অভিনয় করিনি, তার ওপর আমার সহ-অভিনেতা যিনি ছিলেন, তাঁর সঙ্গে মাত্রই পরিচয় হয়েছিল। ওই দৃশ্যের সময় আমার পরনে ছিল কেবল একটি স্পোর্টস ব্রা আর অন্তর্বাস। নিজেকে প্রায় উলঙ্গ মনে হচ্ছিল। খুবই নার্ভাস ছিলাম।

‘সম্পূর্ণ অপরিচিত হওয়ায় আমার সহ-অভিনেতাকে চুমু দিতেও খুব অস্বস্তি লাগছিল। আর পরিচালক একজন পুরুষ হওয়ায় তাঁর সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলাটা আমার জন্য সহজ ছিল না। তবে আস্থা ব্যাপারটি আমার জন্য অনেক সহজ করে দিয়েছিলেন। তিনি পরিচালককে আমার অস্বস্তির কথা জানালে চুম্বনদৃশ্যটি বাদ দেওয়া হয়। এ ছাড়া অন্তরঙ্গ দৃশ্যে অভিনয়ের সময় আস্থা আমার ও সহ-অভিনেতার মধ্যে ডোনাট কুশন দিয়ে দেন, যাতে আমাদের যৌনাঙ্গ স্পর্শ না করে। ব্যাপারটা কিছুটা অদ্ভুত লাগলেও আমি বেশ স্বস্তিতে ছিলাম,’ হেসে বলেন অঞ্জলি।

সাবেক বলিউড তারকা ও বর্তমানে চলচ্চিত্র নির্মাতা পূজা ভাট বলেন, আগেকার দিনে অভিনেত্রীদের সঙ্গে তাঁদের মায়েরা বা ম্যানেজারেরা সেটে যেতেন। তাঁরাই ‘ঘনিষ্ঠতা সমন্বয়কারী’র ভূমিকা পালন করতেন।

এ ছাড়া পূজা ভাট জানান, তিনি যখন চলচ্চিত্র পরিচালনা ও প্রযোজনা শুরু করেন তখন ঘনিষ্ঠতা সমন্বয়কের গুরুত্ব বোঝাতে অভিনেত্রী হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতার বিষয়টি মাথায় রাখতেন।

“অন্তরঙ্গ দৃশ্য শুটের সময় আমি হাতেগোনা কয়েকজন ক্রু সেটে রাখতাম, যাতে করে অভিনেত্রী সেটে অস্বস্তি বোধ না করেন। কারণ—তাঁর দিকে কয়জন তাকাচ্ছে, সেটি ঠিক করা গুরুত্বপূর্ণ। ২০০২ সালে যখন এরোটিক থ্রিলার ‘জিসম’ শুট করছিলাম,  বিপাশা বসুকে বলেছিলাম যে, একজন নারী ও অভিনেত্রী হিসেবে আমি তোমাকে এমন কিছু করতে বলব না যাতে তুমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে না।

‘জিসম সিনেমায় কোনো নগ্নতা ছিল না, তবে সেখানে দৃশ্যমান যৌনতা ছিল। বিপাশার চরিত্রটি ছিল এমন যে, সিনেমার নায়ক জন আব্রাহামকে যৌনতায় প্ররোচিত করতে হবে। আমি বিপাশাকে বলেছিলাম যে, দেখে যেন মনে হয় ব্যাপারটা সাবলীল। বিব্রত হওয়া বা দ্বিধায় ভোগা যাবে না। তবে, তুমি কত দূর যেতে চাও, সে সিদ্ধান্ত তোমাকেই নিতে হবে।’

পূজা ভাট সম্প্রতি ‘বোম্বে বেগমস’ নামের নতুন একটি হিট নেটফ্লিক্স সিরিজে অভিনয় করেছেন। পূজা জানান, ‘বোম্বে বেগমস’-এর সেটে কোনো ঘনিষ্ঠতা সমন্বয়কারী ছিলেন না; তবে, পরিচালক অলংকৃতা শ্রীবাস্তব তাঁকে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে সব রকম সহায়তা করেছেন।

‘কীভাবে অন্তরঙ্গ দৃশ্যগুলো করা যায়, তা নিয়ে অলংকৃতা আর আমি বিস্তারিত আলোচনা করেছি। পরস্পরের ওপর আমাদের বিশ্বাস ছিল, আমরা পরিচালক ও সহশিল্পীদের ওপরও বিশ্বাস রেখেছি। আমি নোংরা অনুভূতি নিয়ে বা বিধ্বস্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরিনি,’ যোগ করেন পূজা।

তবে, সেটে একজন ঘনিষ্ঠতা সমন্বয়কারী থাকার উপকারিতার বিষয়ে পূজা একমত।

“নেটওয়ার্কগুলো যে সেটে ঘনিষ্ঠতা সমন্বয়কারী থাকার ওপর জোর দিচ্ছে, সেটি একটি ইতিবাচক পরিবর্তন। এখন বিষয়গুলো অনেকটাই বদলেছে। আজ আপনি যদি কোনো কারণে বিব্রতবোধ করেন, বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হয়েছেন বা যৌন হয়রানির মুখোমুখি হয়েছেন বলে মনে করেন, তাহলে আপনি অভিযোগ করতে পারেন। এই ব্যাপারটি বেশ দারুণ। পুরোনো দিন থেকে বিশাল একটা পরিবর্তন হলো বলা যায়।’

তবে আস্থা জানালেন, সেটে তাঁর অভিজ্ঞতা যে সব সময় সুখকর, তা কিন্তু নয়।

এর সবচেয়ে বড় কারণ—আস্থাকে সেটে রাখা মানে বাড়তি খরচ গোনা। তবে, আস্থা বলছেন ‘সাংস্কৃতিক বাধা’ মোকাবিলা করাটা অনেক বেশি কঠিন। অভিনেত্রীরা সব সময় যে আস্থার ওপর আস্থা রাখেন, তাও নয়। আবার কোনো কোনো প্রযোজক ও পরিচালক ভাবেন, আস্থা হয়তো তাঁদের ওপর ছড়ি ঘোরাবেন।

“এক পরিচালক একবার আমাকে এড়ানোর জন্য অজুহাত দিয়েছিলেন এভাবে—‘আমার শিল্পীদের আমি খুব ভালোভাবে চিনি ও জানি। ওরা সবাই আমার দারুণ বন্ধু, ওদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি, এমনকি তাদের পরিবারের কাছ থেকে অনুমতিও নিয়েছি।’”

‘পরিচালক আমাকে সরাসরি বাদ দিতে পারছিলেন না, কারণ আমাকে নেওয়ার প্রস্তাবটা দিয়েছিল স্টুডিও, আর আমাকে নিয়োগ দিয়েছিলেন প্রযোজকেরা। তাই, তিনি আউটডোরে শুটিংয়ের সময় আমাকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন ঠিকই, তবে শুটিংয়ের পুরোটা সময়ই তিনি আমাকে ভ্যানে বসিয়ে রেখেছিলেন।

‘অথচ তাঁদের বোঝার দরকার যে, সেটে ছুরি থাকলে আপনার যেমন একজন স্টান্ট ডিরেক্টর লাগে, ঠিক তেমনি আপনার স্ক্রিপ্টে ঘনিষ্ঠ দৃশ্য থাকলে আমাকেও আপনার লাগবে’, যোগ করেন আস্থা।

আস্থার অভিজ্ঞতার কথা জেনে পূজা ভাট বলেন, তিনি এতে মোটেও বিস্মিত হননি। কারণ, অনেক গতানুগতিক ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতার কাছে ব্যাপারটা এমন—‘হয় আমার কথা চলবে, না হলে রাস্তা মাপো’। তবে, সময়ের সঙ্গে এগিয়ে যেতে হলে তাঁদের চিন্তা-ভাবনা বদলাতে হবে।

‘পরিবর্তন হচ্ছে, তবে ধীরে ধীরে। ইন্ডাস্ট্রিতে এমন গুটিকয়েক আছেন, যাঁরা মাথামোটা, বিব্রতকর, পুরোনো ধ্যান-ধারণার পক্ষে এবং পরিবর্তনের বিপক্ষে। তবে, আমাদের একে অপরের পাশে দাঁড়াতে হবে, একে অপরের পিঠ বাঁচাতে হবে, তাতে যদি ক্ষমতাধরদের চোখে চোখ রাখতে হয়, প্রয়োজনে সে ঝুঁকিও নিতে হবে।’