সায়ন সেনগুপ্তের কবিতা

বিষণ্ণ চৌকাঠ

Looks like you've blocked notifications!

হেমন্তের বিষণ্ণ বিকেলে মরচে-রোদ শীতের চাদরে ঢেকে দেয় ট্রেনটাকে।

দূরের গ্রামে আগুন জ্বালিয়েছে কেউ,

ধোঁয়া মিশে গেছে কুয়াশায়, পুকুরের জলে আস্তরণ দেখতে পাই।

কেটে ফেলা হয়েছে ধান, ফাঁকা জমিতে দাঁড়িয়ে থাকেন এক বৃদ্ধ,

ধূসর-রঙা শাল জড়িয়ে। উদাসীন ট্রেন দেখেন,

হঠাৎ চোখে চোখ পড়ে যায়।

 

আলপথ পিচ বানিয়ে

ক্রিকেট খেলে সোয়েটার-হাফপ্যান্ট-আমার ছেলেবেলা।

ট্রেন ছুটে চলে, পেরিয়ে গেছে পুরোনো রেল-ব্রিজ।

নদীতে থাবা বসিয়েছে চড়া, সে চড়ায় বিকেলের বিশ্রামে মাঝির নৌকো,

বিড়িতে সুখটান দিয়ে মাঝি তাকিয়ে থাকেন শূন্যে, কিংবা ট্রেনের দিকে,

হয়তো আমার দিকে। চোখে চোখ পড়ে যায়।

 

শর্ষের খেতে এখনো সবুজ, বিক্ষিপ্ত হলুদ ফুলের উপস্থিতি

শীতের আগাম জানান দেয়।

ফাঁকা রেলজমিতে মায়ের চুল বেঁধে দেয় মেয়ে,

পাশে ট্রেন দেখার আনন্দে লাফায় বালক,

হাসিতে কুয়াশা ঝাপসা হয়ে যায়, হাত নাড়ে ট্রেনের দিকে,

কিংবা আমার দিকে। চোখে চোখ পড়ে যায়।

 

হেসে আমিও হাত নাড়ি, হয়তো আমার ছেলেবেলাকেই।

ধূসর বিকেলে ধূসরতর কাশফুল পুকুরের জলে

হেমন্তের হাওয়ার শেষ পরশ বুলিয়ে যায়।

গন্তব্যের দূরত্ব কমে আসে,

দূরত্ব বেড়ে যায় ছেলেবেলার। হঠাৎ সন্ধ্যে নেমে যায়,

বিষণ্ণ হাসে ছেলেবেলা, বারবার চোখে চোখ পড়ে যায়।