কবিতা

কবির সাক্ষাৎকার ও অন্যান্য

Looks like you've blocked notifications!

কবির সাক্ষাৎকার

 

কাল বোশাখী মেঘ থেকে অবিরাম ঝরে পড়া

রক্ত বৃষ্টি দেখে

পদ্যের ভাব আসে তার—

ধানমণ্ডির ক্যাফেতে

আরিয়ানা গ্রান্ডের গান আর

কাপুচিনোর ধোঁয়া ওঠা মগে

বিহ্বল হাত অক্ষর বিন্যাস করে

আইফোন ছুঁয়ে;

রক্তের ফোঁটায় টোল খাওয়া লেকেরজল

স্মৃতি উপচে টেনে আনে

কবেকার প্রেয়সীর মুখ।

প্রেমের কবিতা লেখার দুর্দান্ত আবহে

টপাটপ লেখেন

গুটিকয় মূল্যবান প্রেমপদ্য।

 

‘এই উড়োঝড়, রক্তস্নাত লেক

প্রেম ছাড়া অন্য কী ভাব আনে

আপনার মনে?’

সাংবাদিকের প্রশ্ন

দেবশিশুর পবিত্র হাসিতে

উদ্ভাসিত  করে তাকে—

‘প্রেমই আরাধ্য কবির, নারীর শরীর

যৌনতা সঙ্গম ইত্যাদি...

রক্ত বৃষ্টির কেমিক্যাল রিয়্যাকশন

বলা যায়, রিফ্রেশমেন্টও।’

 

‘তাহলে ঝড়াচ্ছন্ন বৃষ্টিময়

এই আবহ নির্মাণের কেমিস্টগণই

নব্য কবি?’

 

‘বলতে পারেন’ গবেষণাগার

নিয়ন্ত্রণ তারাই করেন

সুতরাং এমন সমীকরণ

টানা যায়।’

 

সাংবাদিকের প্রশ্নবান থেকে মুখ ফেরান

এবার তিনি

তন্ময় ভাব এনে চেহারায়

লিখে যান—

রক্তবৃষ্টির কেমিক্যাল রিয়্যাকশন

সঙ্গম ও যৌনতা মিশ্রিত

প্রেমপদ্য নিরবধি।

বিরল অর্কিড

শেষ পর্যন্ত তাদের অনেকেই রয়ে যায়

বামন মানুষ—

একদা দল মেলে আকাশে

তাকিয়েছিল যারা।

অনেকেই আকাশ দেখার বদলে

শূন্য খাঁচা দেখতে দেখতে

ক্রমশ পরিণত হয় প্রাণহীন খোলস

অথবা গৃহপালিত প্রাণীতে;

অন্তর্গত মুদ্রাদোষ পেরিয়ে

সমুদ্রস্নান সাফ করে সামাজিক

কলকব্জার প্রচলিত ঝুলকালি

ক’জন পেরেছে উপকূলে পৌঁছতে?

 

    পেরেছে যারা—

     লৌকিক এটিকেটে তারা খাপছাড়া,

                সংখ্যালঘু

সংখ্যাগুরুরা বরাবর স্রোতের অনুকূলেভাসা

গাঢ় সবুজ কচুরিপানা

সূর্যের আলোয় বড়জোর

তরতাজা হয় অবয়বে—

এই তাদের সর্বোচ্চ সফলতা।

বিপরীত স্রোতে দুর্মর  দাঁড়ানো গুটিকয়—

শুরু থেকে যারা চিহ্নিত

বিরল অর্কিড বা দুষ্প্রাপ্য

কালোগোলাপের মতো

তারাই ইতিহাসে

আইনস্টাইন কিংবা

চার্লস ডারউইন হয়।

 

আশ্বিনের আকাশ

সেই সব দীঘল নিঃসঙ্গ দিনে

মল্লিক পাড়ার মাঠে দাঁড়ালে

আশ্বিনের আকাশ হাসতো

দু’পাটি সফেদ দাঁত দিগন্তে ছড়িয়ে।

একাকী চিল প্রসারিত পাখায়

স্থির নিশ্চল

যেন নীলাকাশে ল্যান্ড করেছে

বোয়িং-৭০৭

মল্লিক পাড়ার মাঠে নামবে এখুনি

এক প্যারাস্যুট জাম্পার—

তুলে নেবে নরেনের ক্লান্ত কৈশর;

প্রতিমার পূণ্যমাটি ঘাঁটা

পালদের ছেলে

জীবনের ষড়ঋতু ঝরে যার

ফোঁটা ফোঁটা ঘামে।

 

শোধবোধ

তোমার রাজ্যপাট গোছানো জানি

আমারও একই রকম

তবু কেন বারবার উঁকি দাও    

আমার রাজ্যে?

 

আমিই বা কেন অনুক্ষণ খোঁজ রাখি

তোমার রাজ্যপাটের!