অটোরিকশাচালককে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৬
রাজধানীর দক্ষিণখানে মো. মোস্তফা নামে এক অটোরিকশা চালককে হত্যার ঘটনায় জড়িত একটি চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিএমপি ডিবি) উত্তরা বিভাগ। গতকাল শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) ও শনিবার রাজধানী ও মৌলভীবাজারের রাজনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপি ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—খালেদ খান শুভ, মো. টিপু, মো. হাসানুল ইসলাম ওরফে হাসান, জাহাঙ্গীর হোসেন, আব্দুল মজিদ ও মো. সুমন। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি মুঠোফোন, ছুরি ও অটোরিকশা জব্দ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর রাতে মো. মোস্তফা নামের এক যুবক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বাসা থেকে বের হন। পরে তিনি বাড়িতে না ফিরলে গত ১২ ডিসেম্বর তার মা দক্ষিণখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নিখোঁজ জিডি) করেন।
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর দক্ষিণখান থানার আসিয়ান সিটির ২৩ নম্বর সড়ক এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত মোস্তফার মা শামছুন্নাহার বেগম বাদি হয়ে দক্ষিণখান থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।’
ডিবি প্রধান বলেন, ‘মামলাটি ডিবি পুলিশ তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের শনাক্ত করা হয়। পরে গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের বিমানবন্দর জোনাল টিম মৌলভীবাজারে রাজনগর থানার ইন্দানগর গ্রামের মিনা বেগমের বসত বাড়ি থেকে আসামি মো. খালেদ খান শুভকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার কাছ থেকে নিহত মোস্তফার ব্যবহৃত একটি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়।’
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ আরও বলেন, ‘খালেদ খান শুভর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকা থেকে হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত মো. টিপু, মো. হাসানুল ইসলাম ওরফে হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃত টিপু ও হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনায় জড়িত মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও আব্দুল মজিদকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীর হোসেন ও আব্দুল মজিদদের কাছ থেকে ওই মামলার ঘটনায় নিহত মোস্তফার অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া আরেকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ও ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত একটি ছুরি জব্দ করা হয়।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে নিহত মোস্তফার সত্তরোর্ধ্ব মা শামছুনাহার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ছেলে নিখোঁজ হওয়ার ১১ দিন পর ছেলের নিথর দেহ দেখেছি।’
শামছুনাহার আরও বলেন, ‘আমার ছেলের বউসহ আমার তিন নাতি-নাতনি আছে। তারা ছোট-ছোট, তাদের নিয়ে আমি এখন কোথায় যাব। আমার ছেলেই আমার সংসার চালাত। আমার কেউ রইল না।’