অতিরিক্ত আইজিপির গৃহকর্মী মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল : পুলিশ
গৃহকর্মী মৌসুমি আক্তার (১৪) তিন বছর ধরে অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শকের (অতিরিক্ত আইজিপি) আবু হাসান মোহাম্মাদ তারিকের বাসায় কাজ করছিল। গতকাল বুধবার মৌসুমি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। পুলিশের দাবি—মানসিকভাবে ভারসম্যহীন ছিল মৌসুমি। এক মসজিদের ইমাম মাঝেমধ্যে বাসায় গিয়ে ঝাড়ফুঁকও দিয়ে আসতেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নূর মোহাম্মদ এনটিভি অনলাইনের কাছে এ দাবি করেন।
নূর মোহাম্মদ জানান, গতকাল বুধবার বিকেলে অতিরিক্ত আইজিপির রাজধানীর রমনা পুলিশ কমপ্লেক্সের বাসা থেকে মৌসুমির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ গিয়ে দেখে, মৌসুমি বেলকনির ছাদের লোহার রডের হুকের সঙ্গে ঝুলছে। গলায় প্যাঁচানো প্লাস্টিকের রশি।
নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘মগবাজার মোড়ের একটি মসজিদের এক ইমাম মাঝেমধ্যে মৌসুমিকে ঝাড়ফুঁক করতেন ও পানিপড়া দিয়ে আসতেন। মৌসুমি মানসিকভাবে ভারসম্যহীন ছিল বলে আমরা জেনেছি।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) মর্গে ময়নাতদন্তের পর মৌসুমির মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘ময়নাতদন্তের পর মৌসুমির মরদহে তার বোনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মৌসুমির গ্রামের বাসা টাঙ্গাইলে নেওয়া হচ্ছে। তবে, এখন পর্যন্ত এ আত্মহত্যার কারণ জানা যায়নি।’
মৌসুমির আত্মহত্যার এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। মামলাটি করেছেন পুলিশ সদরদপ্তরের আরঅ্যান্ডসিপি-২ শাখার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ফজলুল হক।
তবে, এসব বিষয়ে জানতে আবু হাসান মোহাম্মাদ তারিক ও ফজলুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে ফজলুল হকের মামলার বিবরণীতে বলা হয়, ‘মৌসুমি অতিরিক্ত আইজিপির তারিক স্যারের বাসায় তিন বছর ধরে কাজ করে। গতকাল বুধবার স্যার নিজ বাসার জন্য গাভীর দুধ পাঠান। এরপর ম্যাডাম (তারিকের স্ত্রী) আমাকে দুধ বাসায় রেখে আসার জন্য বলেন।’
মামলার বিবরণীতে আরও বলা হয়, ‘আমি (ফজলুল) বিকেল সোয়া চারটার দিকে দুধ নিয়ে বাসায় যাই। গিয়ে দরজা বন্ধ পাই। অনেক বার কলিংবেল দিয়েও ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ পাইনি। পরে বিষয়টি আমি ম্যাডামকে মুঠোফোনে জানাই। ম্যাডাম আমাকে অপেক্ষা করতে বলেন। আমি অপেক্ষায় থাকি।’
মামলার বর্ণনায় আরও বলা হয়, ‘আনুমানিক পাঁচটার দিকে ম্যাডাম বাসায় গিয়ে চাবি দিয়ে দরজা খুললে আমরা ভেতরে প্রবেশ করি। কিন্তু, ঘরের মধ্যে মৌসুমির কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে পরে বেলকনিতে গিয়ে দেখি, মৌসুমি ছাদের লোহার রডের হুকের সঙ্গে ঝুলছে। গলায় প্যাঁচানো প্লাস্টিকের রশি। পরবর্তীতে রমনা থানায় খবর দিলে পুলিশ মৌসুমিকে নিচে নামান। তখন বোঝা যায়, মৌসুমি মারা গেছে।’