আব্দুল্লাহপুরে মাইক্রোবাস ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৬
রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর এলাকায় মাইক্রোবাস ছিনতাইয়ের ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার নরসিংদী ও কুমিল্লা জেলায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগ।
আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন মীর মিজান মিয়া, হাবিব মিয়া, মো. ফারুক, কামাল মিয়া, আল আমিন ও মো. মোবারক। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইকৃত একটি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয় বলে জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল ঢাকার আব্দুল্লাহপুরে একটি মাইক্রোবাস ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মাইক্রোবাসটির মালিক মো. আজহারুল ইসলামে ২৭ এপ্রিল ডিএমপির উত্তরা পূর্ব থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২১ এপ্রিল অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি তার বিদেশফেরত আত্মীয়কে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আনার জন্য কিশোরগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে একটি হায়েস মাইক্রোবাস ভাড়া করেন। ২২ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মাইক্রোবাস চালক মো. আবুল বাশার ওই ব্যক্তিকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। ওই ব্যক্তি করিমগঞ্জ এলাকা থেকে চারজন লোককে মাইক্রোবাসে ওঠান। এরপর মাইক্রোবাসটি ঢাকার আব্দুল্লাহপুরে পৌঁছলে যাত্রীবেশে অপরাধীরা মাইক্রোবাসটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
আজ সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানা এলাকায় গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ছিনতাই চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ চক্রের সদস্য গ্রেপ্তারকৃত হাবিব মিয়া গাড়ি ছিনতাই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তিনি জামিনে বেরিয়ে এসে গাড়ি ছিনতাইয়ের অপরাধের সঙ্গে পুনরায় জড়িয়ে পড়েছেন। অপর গ্রেপ্তারকৃত মিজান গাড়ির নকল নম্বর প্লেট ও কাগজপত্র তৈরি করেন।
এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, পুলিশকে এড়ানোর জন্য এ চক্রের সদস্যরা অন্যের নামে রেজিস্ট্রিকৃত মোবাইল সিম কার্ড ব্যবহার করেন। অপরাধীরা যাতে অপরাধ করতে না পারে সেজন্য নিজের নামে রেজিস্ট্রিকৃত সিম অন্যকে ব্যবহার করতে না দিয়ে নিজেই ব্যবহার করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, মাইক্রোবাসটি ঢাকার আব্দুল্লাহপুরে এলে গ্রেপ্তারকৃতরা লুঙ্গি, গামছা ও দঁড়ি দিয়ে মাইক্রোবাস চালক মো. আবুল বাশারের হাত-পা বেঁধে ফেলে মাইক্রোবাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। গ্রেপ্তারকৃত মো. ফারুক মাইক্রোবাসটি চালিয়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গাউছিয়ার দড়িকান্দি নিয়ে চলন্ত গাড়ি থেকে চালককে ফেলে দেন।
সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃত হাবিব গাড়িটি চালিয়ে কুমিল্লা জেলার চান্দিনা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নিয়ে যান। মাইক্রোবাসটি গ্রেপ্তারকৃত মিজানের কাছে এক লাখ ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। মিজান ভুয়া নম্বর প্লেট ও কাগজপত্র সংগ্রহ করে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভাড়ার বিনিময়ে গাড়িটি চালাতেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুরাতন গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে গাড়ির কাগজপত্র বিআরটিএর মাধ্যমে যথাযথভাবে যাচাই করে কেনার অনুরোধ জানান পুলিশ কর্মকর্তা এ কে এম হাফিজ আক্তার।