আরসা কমান্ডার ছলিমসহ ৮ রোহিঙ্গা গ্রেপ্তার
কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পুলিশের ব্লক রেইড অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেল থেকে রাতব্যাপী অভিযান চালিয়ে ১৫ নম্বর জামতলী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন জায়গা থেকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ আরসার কথিত কমান্ডার ছলিম মাস্টারসহ ৮ জন রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় তৈরি অস্ত্র জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ১৩ নম্বর ক্যাম্পের এনায়েত উল্লাহ (২০), একই ক্যাম্পের নুর মোহাম্মদ (২৯) ও মো. আরিফ উল্লাহ (৩২), ১৯ নম্বর ক্যাম্পের আব্দুল আমিন (২৮), ১৪ নম্বর ক্যাম্পের রফিক (২১), ১৫ নম্বর ক্যাম্পের মো. রফিক (২৫) ও ফিরোজ মিয়া (২২) এবং আরসার কমান্ডার মো. ছলিম মাস্টার (৩০)।
আজ মঙ্গলবার সকালে ৮ এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. কামরান হোসেনের দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, গতকাল সোমবার উখিয়া উপজেলার জামতলী ১৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাহাড়ি এলাকায় একদল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতির খবর পেয়ে এপিবিএনের একটি টিম ক্যাম্পে ব্লক রেইডের সিদ্ধান্ত নেয়। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে জামতলী এপিবিএন ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যরা সন্ধ্যা থেকে রাতে ক্যাম্পের ব্লক-ডি/১৩ এর উল্লিখিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে পুলিশ কথিত আরসা কমান্ডার ছলিমসহ আট রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে কাঠের বাটযুক্ত লোহার তৈরি দা, হাসুয়া, শাবল, সিমকার্ড, মোবাইল ফোনসেট, নোট বুক জব্দ করা হয়।
পুলিশের অভিযান টের পেয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ ১৫ নম্বর ক্যাম্পের সিআইসি অফিসের সামনে থেকে দলনেতা আরসা কমান্ডার মো. ছলিম মাস্টারকে গ্রেপ্তার করে।
এপিবিএনের এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ১ নম্বর আসামি এনায়েত উল্লাহ , (২) আব্দুল আমিন, (৩) নূর মোহাম্মদ, (৪) মো. রফিক (২১), (৫) মো. রফিক (২৫) ও (৭) মো. আরিফ উল্লাহ আরসার অন্যতম নেতা আনাসের ঘনিষ্ঠ সহচর এবং আরসা সদস্য। ৬ নম্বর আসাসি ফিরোজ মিয়া চিহ্নিত মাদক কারবারি এবং আরসার অন্যতম সদস্য এবং ৮ নম্বর আসামি ছলিম মাস্টার আরসার স্হানীয় কমান্ডার। গ্রেপ্তারকৃতদের উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়া কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিজ অফিসে খুন হন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহ। ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে মুহিবুল্লাহর ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে উখিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মুহিবুল্লাহকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ কথিত আরসার সদস্যরা খুন করেছে বলে সাধারণ রোহিঙ্গারা অভিযোগ করেছে। এরপর থেকেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এপিবিএন ও থানা পুলিশ নিয়মিত ব্লক রেইড দিয়ে আসছে। মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ইলিয়াস আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এ ছাড়া ক্যাম্পগুলোতে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত কথিত আরসা সদস্যসহ ৩০ জনেরও বেশি সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।