রাখাইন রাজ্য পরিদর্শন করেছে প্রতিনিধি দল, রোহিঙ্গাদের দাবি নাগরিকত্ব
মিয়ানমারের রাখাইনের মংডু শহর ঘুরে এসে রোহিঙ্গারা জানিয়েছে তাদের নাগরিকত্ব, নিজেদের ভিটে মাটি, রোহিঙ্গাদের মর্যাদা এবং চলাফেরার স্বাধীনতা দিলে তারা মিয়ানমারে অবশ্যই ফিরে যাবে। মংডু শহরের পরিবেশ একটু ভালো হলেও গ্রামের পরিবেশ এখনও প্রত্যাবাসনের অনুকূলে নয়। শুক্রবার (৫ মে) সন্ধ্যায় টেকনাফ ট্রানজিট ঘাটে গণমাধ্যমে এই মতামত ব্যক্ত করেন দুজন রোহিঙ্গা নেতা।
টেকনাফে ট্রানজিট ঘাটে পৌঁছে প্রতিনিধি দল মুখোমুখি হন গণমাধ্যমের। এসময় রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা মোহাম্মদ সুফিয়ান বলেন, ‘আমি যে গ্রামের বাসিন্দা সে গ্রামে নিজের বাড়িতে গিয়ে দেখি আমার বাড়িতে একটা ক্যাম্প করেছে। আমরা এই ক্যাম্পে নয় নিজের ভিটা মাটিতে ফিরতে চাই। আমাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে।’
রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘নিজেদের ভিটে বাড়িতে গিয়ে থাকতে না পারলে আমরা কোথায় যাব। আমরা মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বদেশে ফিরতে চাই। কিন্তু ওখানে গেলে আমাদের বলা হয় ক্যাম্পে থাকতে হবে। নাগরিকত্ব দেবে না।’
তবে সরকারি প্রতিনিধি দলের নেতা শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাখাইনের মংডু শহর ও গ্রামের পরিবেশ এখন অনেক ভালো। মংডু শহরে অধিকাংশ রোহিঙ্গা কাজ কর্ম করছে ঘুরছে অবাধে। মংডু শহরের আশি ভাগ মানুষ রোহিঙ্গা। তারা নিজেদের মতো কাজ কর্ম করছে। রোহিঙ্গা সমস্যাটা দীর্ঘদিনের। ৭০ বা ৮০ বছরের সমস্যা একদিনে সমাধান করা সম্ভব নয়। রোহিঙ্গাদের টেকসই এবং মর্যাদার ভিত্তিতে প্রত্যাবাশন করতে চায় বাংলাদেশ।’
সংবাদ সম্মেলনে মিজানুর রহমান আরও বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইনের পরিবেশ এখন অনেক ভালো। রোহিঙ্গারা মোটামুটি স্বাধীনভাবে কাজ কর্ম করছে এটা দেখা গেছে। সরকারিভাবে রোহিঙ্গারা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে।’
মিয়ানমারের রাখাইনে প্রত্যাবাসনের পরিবেশ দেখে কক্সবাজারের টেকনাফে ফিরেছে ২০ সদস্যের রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলসহ বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় তারা টেকনাফের ট্রানজিট ঘাটে এসে পৌঁছে।
এর আগে শুক্রবার সকালে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের আগে রাখাইনের পরিবেশ দেখতে ২৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মিয়ানমারের রাখাইনে যান। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তারা কক্সবাজারের টেকনাফ ট্রানজিট ঘাট দিয়ে নাফ নদী পার হয়ে মিয়ানমারের মংডু রওনা দেন। প্রতিনিধিদলে ২০ জন রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা ছাড়াও ৭ জন সরকারি কর্মকর্তা রয়েছে। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাশন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। বাংলাদেশে আশ্রিত মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকদের প্রত্যাবাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রতিনিধিদলটি রাখাইনে যান।