ইয়াবা পাচার মামলায় ৭ রোহিঙ্গাকে যাবজ্জীবন
কক্সবাজারে ইয়াবা পাচার মামলায় মিয়ানমারের সাত রোহিঙ্গা নাগরিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ সময় জরিমানা অনাদায়ে প্রত্যেক আসামিকে আরও ছয় মাস করে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
আজ রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলের আদালত এ রায় দেন বলে জানান কক্সবাজারের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন এম. বেলাল হোসেন, ইয়ার মোহাম্মদ, জয়নাল হোসেন, জাকির হোসেন, মঞ্জুর আলম, আব্দুর রহমান ও মো. জাকির হোসেন।
আসামিরা সবাই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের আকিয়াব জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।
মামলা নথির বরাতে ফরিদুল আলম জানান, গত ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর মধ্য রাতে বঙ্গোপসাগরে টেকনাফ উপজেলার শাহপরীরদ্বীপ উপকূলবর্তী গভীর সাগরপথে ট্রলারযোগে মিয়ানমার থেকে মাদকের বড় একটি চালান পাচারের খবরে কোস্ট গার্ডের একটি দল অভিযান চালায়। একপর্যায়ে শাহপরীরদ্বীপ থেকে অনন্ত সাত থেকে আট নটিক্যাল মাইল দূরবর্তী সাগরে সন্দেহজনক একটি মাছ ধরার ট্রলার দেখতে পেয়ে কোস্ট গার্ড সদস্যরা থামার জন্য নির্দেশ দেন। কোস্ট গার্ড সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে ট্রলারে থাকা লোকজন পালানোর চেষ্টা করে। পরে ধাওয়া দিয়ে ট্রলার থামিয়ে সাত জনকে আটক করা হয়। এ সময় ট্রলারে তল্লাশি করে পাওয়া যায় দুই লাখ ৮০ হাজার পিস ইয়াবা। এ ঘটনায় পরের দিন (২ ডিসেম্বর ২০২০) কোস্ট গার্ড টেকনাফ স্টেশনের সদস্য এম. এ. ইসলাম বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে টেকনাফ থানায় মামলা করেন। পরে গত ২০২১ সালের ২৭ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন। এরপর গত বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর (চার্জগঠন) আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল বলেন, মামলার সার্বিক বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আজ বিকেলে আদালতের বিচারক রায় ঘোষণা করেন। এতে সাক্ষ্যপ্রমানের ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক মামলার সাত আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণাকালে মামলার সব আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।