এমপিওর দাবিতে বেসরকারি কলেজের শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত
গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এমপিওভুক্তির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি টানা দুদিন পালনের পর মঙ্গলবার বিকেলে স্থগিত করেছেন দেশের বেসরকারি কলেজের অনার্স ও মাস্টার্সের শিক্ষকরা। এমপিওভুক্তির বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হলে এ কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।
জিএমপির গাছা থানার ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, দেশের বিভিন্ন বেসরকারি কলেজের অনার্স ও মাস্টার্সের শিক্ষকরা বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে সোমবার সকালে গাজীপুর মহানগরীর বোর্ডবাজারস্থ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এসে জড়ো হয়। এক পর্যায়ে তারা বেসরকারি কলেজের অনার্স ও মাস্টার্সের শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে ওই ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন। রাতেও তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে টানা দুদিন এ কর্মসূচি পালন করেন। কর্মসূচি পালনের একপর্যায়ে মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি আন্দোলনরতদের জানান, শিক্ষামন্ত্রী বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তিনি দেশে ফিরে এলেই শিক্ষকদের প্রতিনিধি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে এমপিওভুক্তির বিষয়টি সমাধানের জন্য শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দেন। উপাচার্য এসময় অর্থমন্ত্রীরও সহযোগিতা কামনা করেন। উপাচার্যের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনরত শিক্ষকরা তাদের অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করে এলাকা ত্যাগ করেন। বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশন এ অবস্থান কর্মসূচির উদ্যোগ নেয়।
বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল জানান, দীর্ঘ ২৯ বছর থেকে সারা দেশের প্রায় সাড়ে ৫ হাজার অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষককে জনবলে অন্তর্ভুক্তি না থাকার অজুহাতে সরকারি সুযোগ সুবিধার (এমপিও) বাইরে রাখা হয়েছে। এসব শিক্ষকদের বেসরকারি কলেজে বিধি মোতাবেক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের শতভাগ বেতন প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ কলেজ কর্তৃপক্ষ তা আমলে নিচ্ছে না। করোনাকালে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এসব শিক্ষকদের নামমাত্র বেতনও বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পরিবার নিয়ে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
তিনি আরও জানান, একই প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পেয়ে সদ্য জাতীয়করণকৃত কলেজের অনার্স-মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকগণ ক্যাডার কিংবা নন-ক্যাডারভুক্ত হয়েছেন। অন্যদিকে কামিল (মাস্টার্স) শ্রেণির শিক্ষকরাও এমপিওভুক্ত হয়েছেন। অথচ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকগণও এনটিআরসিএ সনদধারী হয়েও জনবল ও এমপিও নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত না থাকায় এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না, যা চরম বৈষম্য এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী।