কিশোরগঞ্জে ‘শতবর্ষী’ প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী
অনিকা জাহান সেতু নামে প্রথম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বয়স এখন ১০৭ বছর ছয় মাস! চোখ কপালে ওঠার মতো বিষয়! অবাক করার মতো এ ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌরসভা কার্যালয়ের দেওয়া ত্রুটিপূর্ণ জন্ম সনদের কারণে।
অনিকা জাহানের বাবা পাকুন্দিয়া পৌর এলাকার সৈয়দগাঁও গ্রামে মো. ওয়াসিম জানান, সেতুর জন্ম ২০১৪ সালের ২৪ মে। সে অনুযায়ী তার ইপিআই টিকাদান কার্ডেও জন্ম তারিখ লেখা আছে। কিন্তু পৌরসভা থেকে ওর জন্মের যে সনদপত্র দেওয়া হয়েছে, তাতে জন্ম তারিখ লেখা হয়েছে ২৪ মে ১৯১৪। সে হিসেবে জন্মের সনদপত্রে তার বয়স ১০০ বছর বেশি লেখা হয়েছে। অর্থাৎ জন্মের সনদপত্র অনুযায়ী সাড়ে সাত বছরের সেতুর বয়স এখন ১০৭ বছর ছয় মাস।
ওয়াসিম বলেন, ‘আমার মেয়ে সেতু পাকুন্দিয়া উপজেলার মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে নানার বাড়িতে থেকে পড়ালেখা করে। সে মঙ্গলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। জন্মসূত্রে তার প্রকৃত বয়স সাড়ে সাত বছর। প্রায় তিন মাস আগে উপবৃত্তির আবেদন করার জন্য জন্ম সনদপত্র আনতে বলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। বাড়ি গিয়ে বিষয়টি তার নানাকে বলে সেতু। পরে তার নানা পাকুন্দিয়া পৌরসভা কার্যালয় থেকে জন্মসনদ আনেন। জন্মসনদ প্রধান শিক্ষকের দেখানো হলে প্রধান শিক্ষক জানান, এতে বয়স ১০০ বছর বেশি লেখা হয়েছে।
বিষয়টি সংশোধনের জন্য পৌরসভায় যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকে জানানো হয়, বয়স সংশোধন করতে হলে আদালতে মামলা করতে হবে। এরপর সংশোধনের জন্য পৌরসভায় আবেদন করতে হবে।
মঙ্গলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলমাছ উদ্দিন বলেন, ‘পৌরসভা কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা এ ভুলটি করেছে। তাদের এ ভুলের কারণে একটি পরিবার মারাত্মক হয়রানিতে পড়েছে। বিষয়টি দুঃখজনক।’
পাকুন্দিয়া পৌরসভার সচিব সৈয়দ শফিকুর রহমান বলেন, ‘সনদপত্র টাইপ করার সময় হয়তো ভুলবশত ২০১৪-এর জায়গায় ১৯১৪ লেখা হয়েছে। তবে যেভাবেই হোক এটি কোনো ছোটখাটো ভুল নয়। এটি একটি বড় ভুল। অতি দ্রুত বিষয়টি কীভাবে সংশোধন করা যায়, তা ইউএনও স্যারের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব।’