বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীর বলেছেন, আর না। এখন সময় এসে গেছে, যার যা শক্তি আছে সেটি দিয়ে সমস্ত দেশের মানুষকে জাগিয়ে তোলা। আজকে জিয়া পরিষদের দায়িত্ব হবে এই গণজাগরণের কাজটি করা। আন্দোলনকে দমন করার জন্য সরকার কী ভয়ংকরভাবে কাজ করছে। তারা গণতন্ত্রের কথা বলে, বিরোধী দলের সমাবেশে বাধা দিচ্ছে।

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপি মহাসচিব ‘মৃত্যুকূপে ধাবমান বাংলাদেশ’ শীর্ষক স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে একথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শহীদদের আত্মত্যাগকে শক্তিতে পরিণত করে আমাদেরকে ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। আমাদেরকেও রাস্তায় নেমে আসতে হবে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে সোচ্চার কণ্ঠে বলতে হবে, তাদেরকে আমরা চাই না, মানুষ চায় না। যারা মানুষ খুন করে, গুম করে, যারা জনগণের সম্পদ লুটে নিয়ে বিদেশে পাঠায়, তাদেরকে মানুষ চায় না। এই সরকারকে যদি আমরা সরাতে না পারি, এই দেশের অস্তিত্ব থাকবে না, জাতির অস্তিত্ব থাকবে না।

সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল চলমান আন্দোলনে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের আত্মত্যাগকে শক্তিতে পরিণত করে সকলের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কীভাবে অন্যায়-অত্যাচার-নিপীড়ন-নির্যাতন হচ্ছে, তা আপনারা সবাই জানেন।

তিনি আরও বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করছেন যে, আন্দোলনকে দমন করার জন্য সরকার কী ভয়ংকরভাবে কাজ করছে। তারা গণতন্ত্রের কথা বলে, বিরোধী দলের সমাবেশকে বাধা দিচ্ছে। বাস মালিকদের দিয়ে গণপরিবহণ বন্ধ করেছে, সমাবেশ যেন বড় না হয়। সমাবেশ বড় না হলে তাদের (সরকার) লাভটা কি হবে? তারা বলতে পারবেন যে, বিএনপির সমাবেশ বড় হয়নি। তাতে কি হবে? মানুষের অন্তরের মধ্যে যে ক্ষোভ জমে আছে, প্রতিটি মানুষের মধ্যে যে ক্ষোভ বিরাজ করছে, তা কি ওরা মুছে দিতে পারবে ? পারবে না।

গত আগস্ট থেকে জ্বালানি তেল ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপি জেলা উপজেলা পর্যায়ে সভা-সমাবেশের কর্মসূচি করে। এসব কর্মসূচি পালনকালে ভোলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুর রহিম, ছাত্রদলের নূরে আলম, নারায়ণগঞ্জে যুবদলের রাজা আহমেদ শাওন, মুন্সীগঞ্জে যুবদলের শহিদুল ইসলাম শাওন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়।

বিএনপি সমর্থিত পেশাজীবীদের সংগঠন ‘জিয়া পরিষদ’ এর উদ্যোগে সাম্প্রতিককালে পুলিশের গুলিতে নিহত ভোলার আব্দুর রহিম, নূরে আলম, নারায়ণগঞ্জের রাজা আহমেদ শাওন, মুন্সীগঞ্জের শহিদুল ইসলাম শাওনের পরিবারকে জিয়া পরিষদের আর্থিক সহযোগিতা তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব। সাম্প্রতিক চলমান আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহতদের স্মরণে ‘পুস্তিকা’ প্রকাশ করেছে জিয়া পরিষদ।

জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় অধ্যাপক এমতাজ হোসেন, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান ফরহাদ, ছাত্রদলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল, নিহত শহিদুল ইসলাম শাওনের বাবা ছোয়াব আলী ভুঁইয়া বক্তব্য দেন। এসময় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হায়দার আলী লেলিন, অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আহসান, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।