গ্রামীণ ব্যাংকের গ্রাহকের টাকা গেল মাঠকর্মীর পকেটে
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2021/11/25/netrkonaa.jpg)
নেত্রকোনা সদর উপজেলার চল্লিশা ইউনিয়নে গ্রামীণ ব্যাংকের মাঠকর্মী নাজমা বেগমের বিরুদ্ধে ৬৫ জন গ্রাহকের প্রায় ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। প্রতারিত গ্রাহকরা গতকাল বুধবার ব্যাংকের ওই শাখায় জড়ো হয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের টাকা দাবি করে।
এলাকাবাসী ও গ্রামীণ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, জেলা সদরের গ্রামীণ ব্যাংক শাখায় মাঠকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন সাতপই এলাকার আবদুস সালামের স্ত্রী নাজমা বেগম। ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারি তিনি এ পদে যোগ দেন। প্রায় দুই বছর ধরে তিনি জেলা শহরের সাতপাই, চল্লিশা ইউনিয়নের ইয়ারনসহ আশেপাশের এলাকায় হতদরিদ্র মানুষকে নিয়ে সমিতি গড়ে তোলেন। পরে ব্যাংক থেকে ওই সমস্ত গ্রাহকের নামে ঋণ নেয়। তার ছেলের অসুস্থতার কথা বলে কৌশলে গ্রাহকদের কিছু টাকা দিয়ে বেশিরভাগ টাকা হাতিয়ে নেন। ব্যাংকের ৬৫ জন গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ৩৪ লাখ টাকা তিনি হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ ওঠে। তিনি খুব কৌশল অবলম্বন করতেন। যার কাছ থেকে টাকা নিতেন অন্যজন যাতে না জানতে পারে তার জন্য অনুরোধ করতেন। এক পর্যায়ে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বিষয়টি জানাজানি হয়। গ্রাহকরা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বরাবরে অভিযোগ করে।
গ্রামীণ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গত ১৬ সেপ্টেম্বর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এরপর থেকে তিনি কর্মস্থলে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকেন। গতকাল তদন্ত দল তাকে গ্রামীণ ব্যাংকের ওই শাখায় ডেকে নেন। এ খবর পেয়ে প্রতারিত গ্রাহকরা ওই শাখায় জড়ো হয়। এবং পাওনা টাকা দাবি করে। গ্রামীণ ব্যাংকের ওই শাখা থেকে ঋণ নিয়ে কেউ কেউ দেউলিয়া হয়েছেন। অনেককে বাড়ি ছাড়া পর্যন্ত হতে হয়েছে।
গ্রামীণ ব্যাংক চল্লিশা শাখার মাঠকর্মী নাজমা বেগম টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি অসুবিধায় পড়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলাম। এ ব্যাপারে তদন্ত করা হচ্ছে। দেখি কীভাবে কী করা যায়।’
গ্রামীণ ব্যাংক চল্লিশা শাখার ব্যবস্থাপক মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘মাঠকর্মী নাজমা বেগম ব্যাংক থেকে গ্রাহকদের নামে ঋণ নিয়ে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এজন্য ব্যাংকের কোনো দায় নেই।’
গ্রামীণ ব্যাংকের এরিয়া ম্যানেজার মো. আবদুল মান্নান আকন্দ বলেন, ‘মাঠকর্মী নাজমা বেগম খুবই চালাক। তিনি যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন- তারা আগে বিষয়টি জানাননি। কিছুদিন আগে তার চালচলনে সন্দেহ দেখা দেয় এবং বিষয়টি কিছুটা জানাজানি হয়। গ্রাহকরা গত এপ্রিলে অভিযোগ করে। অভিযোগের বিষয়টির তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’