চেয়ারম্যান-মেম্বার না হয়েও দেশের উন্নয়ন করা যায় : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে এবং দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধকরণে অবদান রাখতে সবাইকে মেম্বার-চেয়ারম্যান হতে হয় না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে কুমিল্লা সাংবাদিক ফোরাম, ঢাকার (সিজেএফডি) দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জনপ্রতিনিধি না হয়েও মানসিকতা এবং দেশপ্রেম থাকলে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখা যায় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের মধ্যে শ্রেণিভেদ আছে, পেশার ভিন্নতা, ধর্মীয় ও বর্ণের পার্থক্য আছে। ভিন্নতা থাকতে পারে কিন্তু আমরা মানুষ। যার যা প্রাপ্য সম্মান তাকে তা দিতে হবে। সকল পেশার প্রতি সম্মানবোধ রাখা উচিত। দেশের উন্নয়নে কাউকে হেয় করার সুযোগ নেই। কাউকে বাদ দিয়ে উন্নত দেশ গড়া সম্ভব নয়। তাই সব ভেদাভেদ ভুলে দেশের উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী জানান, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী এবং যুগোপযোগী করতে জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের আইনে সংশোধন আনা হচ্ছে। ইতোমধ্যে জেলা পরিষদ এবং পৌরসভার খসড়া সংশোধনী মন্ত্রিপরিষদে পাস হয়েছে।
মন্ত্রী আরও জানান, পৌরসভায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা-সিইও নিয়োগ প্রদান নিয়ে সমালোচনা হলেও এই নিয়োগের ফলে নিয়োগকৃত পৌরসভায় রাজস্ব আদায়ে ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। আমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের সময় মাত্র ৩৮টি পৌরসভা কর্মচারীর বেতন দিতে পারতো। বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে এখন অধিকাংশ পৌরসভা কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করছে।
মো. তাজুল ইসলাম জানান, ঢাকা শহরে অনেক নদী ও খাল বেদখল হয়ে গেছে। সেগুলো উদ্ধারে দুই সিটি করপোরেশন এবং বিআইডব্লিউটিএ অভিযান চালাচ্ছে। অনেক উদ্ধারও করা হয়েছে। কল্যাণপুরে ওয়াটার রিটেনশন প্লান্টের জন্য রাখা ১৭৩ একর জায়গার মধ্যে মাত্র সাড়ে তিন একর জায়গা ছাড়া বাকি সব দখল করে ঘর-বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জায়গা দখলমুক্ত করার জন্য সিটি করপোরেশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ড্যাপ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের প্রথমদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) এর আহ্বায়ক করেন। গত এক বছর করোনার সংকটেও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে সেমিনার ও মতবিনিময় করেছি। নানান সমস্যা সমাধান করে সর্বশেষ ৩০ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভা কমিটি চূড়ান্ত করে। এখন গেজেটের অপেক্ষায় রয়েছে।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, সারা দেশের মতো কুমিল্লাতেও ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়িত হলে বৃহত্তর কুমিল্লার ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। কুমিল্লার উন্নয়নে জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। কুমিল্লা শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন শহরে পরিণত করতে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে।
সিজেএফডির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শরীফুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু, সিজেএফডির সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, সাবেক সভাপতি মাহমুদুর রহমান খোকন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম প্রমুখ।