তেজগাঁও থানার মামলায় জামিন পেলেন সাংবাদিক শামস
রাজধানীর তেজগাঁও থানায় দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় জামিন পেয়েছেন প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামস।
আজ রোববার (৯ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদী এই আদেশ দেন। এদিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন শামসুজ্জামান। এরপরে শুনানি শেষে বিচারক আগামী ধার্য তারিখ পর্যন্ত এক হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন।
শামসুজ্জামানের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এর আগে রমনা থানার মামলায় সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসের জামিন দেন সিএমএম আদালত। সেই মামলায় জামিনে রয়েছেন ও আসামির বিরুদ্ধে দুটি মামলায় অভিযোগ একই। সে কারণ দেখিয়ে আদালতে জামিনের আবেদন করা হয়েছে ও শুনানিতে একই কথা বলা হয়েছে। শুনানি শেষে বিচারক জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।
নথি থেকে জানা গেছে, গত ২৯ মার্চ রাতে রমনা থানায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, পত্রিকাটির সাভারের নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান ও ক্যামেরাম্যানসহ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন আইনজীবী আবদুল মালেক। মামলায় প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্ন করার অভিযোগ করেন বাদী। এরপরে শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ৩০ মার্চ জামিনের আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে তিনি ৩ এপ্রিল জামিন পান। এর আগের দিন ২ এপ্রিল মতিউর রহমান উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পান।
এজাহার থেকে জানা গেছে, গোলাম কিবরিয়া নামের এক ব্যক্তি ২৯ মার্চ তেজগাঁও থানায় শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে দৈনিক প্রথম আলো একটি ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ করে। সংবাদটিতে দেখা যায়, একটি শিশু ফুল হাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটকে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিবেদকের দাবি, শিশুটির নাম জাকির হোসেন। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, জাকির হোসেন বলেন, ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়ে কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব’। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদটি ভাইরাল হয়ে যায়। দেশ-বিদেশে অবস্থানরত হাজার হাজার মানুষ সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেন। এ ঘটনায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। পরবর্তীতে ৭১ টিভিতে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, প্রথম আলো উদ্দেশ্যেপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা পরিচয় ও মিথ্যা উদ্বৃতি দিয়ে সংবাদটি পরিবেশন করেছে। শিশুটির বিষয়ে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। পরে শিশুটি জানিয়েছে, প্রথম আলোর সাংবাদিক তার হাতে ১০ টাকা দিয়ে এই ছবি তুলেছে। এতে প্রমাণিত হয়েছে, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও বাংলাদেশের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এমন সংবাদ করেছে প্রথম আলোর ওই প্রতিবেদক।