দেশে সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ নেই : প্রিন্স
দেশে সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ নেই বলে মন্তব্য করে বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, ‘দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার এবং তাদের ওপর হামলা অব্যাহত আছে। দেশে সরকারি দল ছাড়া আর কারও রাজনীতি করার অধিকার নাই।’
আজ সোমবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রিন্স।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘৮ এপ্রিল দেশব্যাপী বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে দলের ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী এবং সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাসহ নেতাদের গাড়ি ভাঙচুর করে আওয়ামী দুস্কৃতকারীরা। খাগড়াছড়ি সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার মাহফিলও পণ্ড করে দেওয়া হয়েছে। বিএনপির শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনসহ সারা দেশে অসংখ্য নেতাকর্মীর ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অগণিত নেতাকর্মীকে। এসব ঘটনায় আবারও প্রমাণিত হলো-বর্তমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার দেশ থেকে বিরোধী দলের অস্তিত্ব ধ্বংস করতে এখন মরণকামড় দিতে শুরু করেছে।’
সারা দেশে বিএনপির বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও মামলার বর্ণনা দিয়ে প্রিন্স বলেন, ‘সরকার একদলীয় শাসনব্যবস্থা পাকাপোক্ত করতে দেশে বিরোধীমত নিশ্চিহ্ন করতে চায়।’
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষ দিশেহারা। রমজান মাসেও মানুষ ঠিকমতো এক বেলা খেতে পাচ্ছে না। অর্ধেকের বেশি জনগোষ্ঠী ঋণ করে সঞ্চয় ভেঙে দিনাতিপাত করছে, ঋণে জর্জরিত হয়ে মানুষ ঋণ শোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করছে, অভাবের তাড়নায় মা তার আদরের সন্তানকেও বিক্রি করে দিচ্ছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীনদের আশীর্বাদপুষ্টরা দুর্নীতি করে, ব্যাংক থেকে ঋণের নামে লুট করে দেশ-বিদেশে বিলাসী জীবনযাপন করছে। আর এসবের প্রতিবাদ করলে এবং সংবাদ প্রকাশ করলে সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে চলছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার খড়গ।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বর্তমানে ভোটারবিহীন সরকার সত্য প্রকাশ ও সমালোচনা সহ্য করতেই পারে না। সরকারের অবৈধ কাজের সমালোচনা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে একের পর এক গণমাধ্যম। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিরোধীদলের মুখপত্র দৈনিক দিনকালের ডিক্লারেশন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কীভাবে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে, সেইসব লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। যা দেশবাসীর জন্য লজ্জার, অন্যদিকে আতঙ্কেরও।’
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘সংসদকে পরিণত করা হয়েছে একদলীয় ক্লাবে। রাষ্ট্রক্ষমতা ধরে রাখতে নিশিরাতের সরকার এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকেও বরদাশত করছে না।’
সংবাদ সম্মেলনে প্রিন্স জানান, চলমান গণআন্দোলনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে আজ সোমবার থেকে দেশব্যাপী বিভাগভিত্তিক ইউনিয়ন পর্যায়ে মানববন্ধন, অবস্থান, প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচি পালিত হবে। এই কর্মসূচি চলবে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত। এর মধ্যে ১০ এপ্রিল রাজশাহী ও সিলেট বিভাগ, ১১ এপ্রিল খুলনা ও কুমিল্লা বিভাগ, ১২ এপ্রিল ঢাকা ও বরিশাল বিভাগ, ১৩ এপ্রিল ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর বিভাগ এবং ১৬ এপ্রিল রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে।