পঞ্চগড়ে স্কুলছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন ও পর্নোগ্রাফি মামলায় যুবক গ্রেপ্তার
পঞ্চগড়ে স্কুলছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন, পর্নোগ্রাফি ও চাঁদা দাবির মামলায় মনির হোসেন (৩০) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানা পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার দিনগত রাতে পৌরসভা এলাকার জালাসী হঠাৎপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ বুধবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নবম শ্রেণির ওই স্কুলছাত্রী বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে বাড়ি থেকে বের হয়ে জালাসী এলাকায় এলে সিয়াম শাহরিয়ার উচ্ছ্বাস তাকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। বাড়িতে মেয়ে নিয়ে ঢোকার খবর পেয়ে একই এলাকার মনির, জিন্নাহ, বিপুল ও লিটন ওই বাড়িতে প্রবেশ করে। পরে তারা স্কুলছাত্রীকে বিবস্ত্র করে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ ও ছবি তুলে। এরপর তারা ভিডিও ও ছবি ফেসবুকে ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। স্কুলছাত্রী এত টাকা দিতে পারবে না বলে তাদের জানায়। তবে উচ্ছ্বাস, মনির ও জিন্নাহকে নয় হাজার টাকা দেয়। মনির, জিন্নাহ, বিপুল ও লিটন আরও টাকা না দিলে ভিডিও ও ছবি ফেসবুকে ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায়। বিকেলে ওই স্কুল ছাত্রীর মন খারাপ দেখে তার মা কী হয়েছে তা জানতে চান। এ সময় সে কান্নায় ভেঙে পড়ে বিষয়টি খুলে বলে।
এ ঘটনায় ওই স্কুলছাত্রীর মা আজ ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন, পর্নোগ্রাফি ও চাঁদাবাজির অভিযোগে শহরের উত্তর জালাসী এলাকার সিয়াম শাহরিয়ার উচ্ছ্বাস (১৭), মো. মনির হোসেন (৩০), মো. জিন্নাহ (২৫), মো. বিপুল (২৫) ও মো. লিটনের (২৭) নামে সদর থানায় মামলা করেন। মামলার পরপরই পুলিশ পঞ্চগড় বাজার থেকে মনির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।
ওই স্কুলছাত্রীর মা ও খালা এ ঘটনায় জড়িত সবাই গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) প্রবীর চন্দ্র রায় বলেন, ওই স্কুল শিক্ষার্থীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। আদালতে গ্রেপ্তার করা মনির হোসেনকে তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত জেলগেটে দুই দিনের জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পাঁচজনের নামে মামলা করা হয়েছে। মামলার আসামি মনির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। নানা অপকর্মের অভিযোগে এদের বিরুদ্ধে থানা ও আদালতে আরও মামলা রয়েছে।