প্রথমবার পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল, খুশি পদ্মাপারের মানুষ
মাদারীপুরে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল চালুকে কেন্দ্র করে খুশির বন্যা বইছে পুরো দক্ষিণাঞ্চলে। সবচেয়ে খুশি জেলার শিবচর, শরীয়তপুরের জাজিরা ও মুন্সীগঞ্জ জেলার সর্বস্তরের মানুষ। আজ মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সেই স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হচ্ছে ট্রেন চলাচল।
গত বছরের ২৫ জুন বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৬ জুন থেকে সেতুতে গাড়ি চলাচল শুরু হয়। সেতুতে ট্রেন চলাচলের অপেক্ষায় রয়েছেন সাধারণ মানুষ।
পদ্মা সেতু দিয়ে রেল চলাচল শুরু হলে মানুষের স্বল্প খরচে যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত হবে, পণ্য পরিবহণ গতি আসবে, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। চাঙা হবে দেশের অর্থনীতি, বিশেষ করে স্বল্প খরচে কৃষিপণ্য রাজধানীতে পাঠাতে পারবে ভাটি অঞ্চলের কৃষকরা।
শিবচরের পাচ্চর এলাকার বাসিন্দা বাচ্চু ফকির বলেন, ‘শিবচরে প্রথমবার ট্রেন চলার খবরে পুরো শিবচরে খুশির বন্যা বাইছে। জীবনের প্রথমবার মাদারীপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ এলাকায় রেলগাড়ি চলতে দেখবে, এটা তাদের কাছে পরম পাওয়া। এর মধ্য দিয়ে দেশবাসী আরও একটি মাইলফলক স্পর্শ করতে যাচ্ছে।’
আজ দুপুর ১২টায় ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশন থেকে বিশেষ ট্রেনে করে পদ্মা সেতুর পার হবেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেনের ট্রায়াল রানের জন্য ইতোমধ্যে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা থেকে একটি বিশেষ ট্রেন ফরিদপুরে আনা হয়েছে বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।
ভাঙ্গা স্টেশন মাস্টার মো. শাহজাহান বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ভাঙ্গা স্টেশন থেকে একটি গ্যাংকার ট্রেন এবং সাত বগির যাত্রীবাহী একটি স্পেশাল ট্রেন মাওয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। প্রথমে গ্যাংকার ট্রেন ছাড়া হবে, তারপর স্পেশাল ট্রেন যাত্রা করবে। যাত্রীবাহী হলেও এই স্পেশাল ট্রেনে কোনো যাত্রী থাকবে না। এ সময় রেল লিংক প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা এবং বিশেষ অতিথিরা উপস্থিত থাকবেন।’
মাওয়ায় পৌঁছানোর পরে রেলমন্ত্রী সড়ক পথে ঢাকায় ফিরবেন। ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে মাওয়া স্টেশনে পৌঁছতে কত সময় লাগতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে ভাঙ্গা স্টেশন মাস্টার মো. শাহজাহান বলেন, ‘কতটা গতিতে চালানো যাবে এবং চালক কতটা গতিতে ট্রেন চালাতে পারবেন; তার ওপর নির্ভর করছে ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে মাওয়া স্টেশনে পৌঁছাতে কতটা সময় লাগবে। তবে আমাদের ধারণা, দুই ঘণ্টার মতো লাগতে পারে।’
মো. শাহজাহান বলেন, ‘ট্রেন দুটি মাওয়া স্টেশনে পৌঁছানোর পরে গ্যাংকার ট্রেন ওখানেই থেকে যাবে। তবে স্পেশাল ট্রেনটি মাওয়া থেকে পুনরায় ভাঙ্গা স্টেশনে ফিরে আসবে।’