বাঘাইছড়িতে গুলিতে ‘জেএসএস কর্মী’ নিহত
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় সুরেশ চন্দ্র চাকমা জীবেশ নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ শুক্রবার ভোরের দিকে উপজেলার দুর্গম বঙ্গলতলি ইউনিয়নের বি-ব্লক এলাকায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহত সুরেশ সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন বলে দাবি করেছে স্থানীয় একাধিক সূত্র। তবে তিনি সংগঠনটির কোনো দায়িত্বে ছিলেন বা সদস্য ছিলেন কিনা সেই সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেনি তারা। এমনকি এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে কিছুই জানায়নি জনসংহতি সমিতিও।
স্থানীয় একাধিক সূত্র বলছে, নিহত সুরেশ চন্দ্র চাকমা জীবেশ মূল জনসংহতি সমিতির অনেক পুরনো কর্মী এবং সাবেক গেরিলা সংগঠন শান্তিবাহিনীর সদস্য। তিনি বিভিন্ন সময়ে সাংগঠনিক নানান দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ তিনি উপজেলা কমিটিরসহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংগঠনটির বিচার কমিটির উপজেলা প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। সুরেশ তার নিজের বাড়িতে নয়, বাড়ির কাছেই এক প্রতিবেশীর বাড়িতে রাতযাপনকালে গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে দাবি তাদের।
প্রাণনাশের ভয়ে সুরেশ নিয়মিতই নিজ বাড়ির বাইরে রাত্রীযাপন করতেন বলেও জানিয়েছে সূত্রগুলো।
এদিকে, আজ সকালে হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে কোনো লাশেরও হদিস পায়নি আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ধারণা, তারা পৌঁছানোর আগেই লাশ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বাঘাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন খান জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ড হয়েছে সেটি পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে নিশ্চিতই বলা যায়। তবে লাশ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, আমরা চেষ্টা করছি লাশ উদ্ধারের। স্থানীয়রাও এই ব্যাপারে সহযোগিতা করছে না।’
তবে এই বিষয়ে মুখ খুলছে না পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিও। সংগঠনটির দায়িত্বশীল কোনো নেতাই ফোনও ধরছে না। অন্য ঘটনায় সংগঠনটির পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক বিবৃতি পাঠানো হলেও এই হত্যাকাণ্ডের প্রায় ছয়ঘণ্টা পরও কোনো বিবৃতি পাঠায়নি সংগঠনটি।
তবে সংগঠনটির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএনলারমা) কেন্দ্রীয় কমিটির সহতথ্য ও প্রচার সম্পাদক জুপিটার চাকমা জানিয়েছেন, ‘তাদের নিজেদের মধ্যকার আভ্যন্তরীণ বিবাদে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে জেনেছি। ওই এলাকাটি সম্পূর্ণই জনসংহতির ঘনিষ্ঠ সংগঠন ইউপিডিএফ-এর নিয়ন্ত্রণাধীন। সেখানে আমাদের পক্ষে প্রবেশ করাও কঠিন ও কষ্টসাধ্য। তারা নিজেরাই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে আমাদের ওপর দোষ চাপাতে চাইছে, কারণ তারা জানে যেহেতু তাদের সঙ্গে আমাদের দ্বন্দ্ব সেহেতু সবাই বিশ্বাস করবে।’