কক্সবাজারের টেকনাফে মায়ের মরদেহ বাড়িতে রেখেই এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন দুই শিক্ষার্থী। গতকাল মঙ্গলবার (২ মে) টেকনাফ এজাহার বালিকা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ওই দুই শিক্ষার্থী।

মৃত মায়ের নাম আনোয়ারা বেগম। পরীক্ষার্থী সাদিয়া ফেরদৌস ও শারমিন আক্তার টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের পানছড়ি পাড়ার জহির আহমদ-আনোয়ারা দম্পতির মেয়ে। তারা টেকনাফের সাবরাং উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান।

সাদিয়া-শারমিনের বাবা জহির আহমদ বলেন, ‘প্রায় এক মাস যাবত শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন তাঁর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম। অবস্থার অবনতি হলে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৩টায় মারা যান তিনি।’

জহির আহমদ বলেন, ‘আমার মেয়েরা এ ঘটনার একদিন আগেও উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। হঠাৎ তাদের মা মারা যাওয়ায় মানসিকভাবে বড় ধাক্কা খায়। এরপরও তারা মঙ্গলবারের পরীক্ষায় অংশ নেয়। এমন মানসিক কষ্ট নিয়ে তারা সামনের দিনগুলোতে কীভাবে পরীক্ষা দেবে একমাত্র আল্লাহ জানেন। মঙ্গলবার দুপুর ২টায় আমার স্ত্রী আনোয়ারা বেগমের জানাজা সম্পন্ন করা হয়।’

জহির আহমদ আরও বলেন, ‘দুই মেয়ে মায়ের মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিতে চাচ্ছিলেন না। কিন্তু পরীক্ষা না দিলে মৃত মা ফেরত আসবে না বরং পরীক্ষায় পাস করলে মায়ের আত্মা শান্তি পাবে এসব বলার পর কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষা দিতে যায়।’

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘পরীক্ষার্থী সাদিয়া ও শারমিনের মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। এটি চরম বেদনাদায়ক ঘটনা। তাদের মানসিকভাবে সহযোগিতা করতে কেন্দ্র সচিবকে জানানো হয়েছে।’