বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা ন্যায়বিচার পাচ্ছে না : ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, বিচার বিভাগকে দলীয়করণের কারণে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা ন্যায়বিচার পাচ্ছে না।
শুক্রবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে ফখরুল এ অভিযোগ করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এদেশে একটা ছদ্মবেশি একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সেজন্যেই তারা একে একে সমস্ত স্বাধীন যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধবংস করে ফেলেছে।
সবার আগে আওয়ামী লীগ সরকার বিচার বিভাগে হাত দিয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে আজকে জনগণের যে আশা-আকাঙক্ষা, দেশে মানুষ অন্তত তার প্রয়োজনের সময় যখন নির্যাতিত হবে রাষ্ট্র দ্বারা, তখন বিচার বিভাগের কাছে গিয়ে একটা রিলিফ পাবে। দুর্ভাগ্যের কথা আজকে সেই বিচার বিভাগকে তারা দলীয়করণ করে নিয়ন্ত্রণ করে এমন একটা জায়গায় নিয়ে গেছে; বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের যে রায়গুলো হয়, সেগুলো রায় হয়ে যাচ্ছে একেবারে জনগণের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, তারা ন্যায়বিচার পাচ্ছে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অতি সম্প্রতি আপনারা দেখেছেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমান যিনি রাজনীতির সাথে কখনই সম্পৃক্ত ছিলেন না, তার বিরুদ্ধেও দুদক একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে। আমরা মনে করি, এটা অত্যন্ত বেআইনি কাজ। এটা শুধু বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নয়, বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
দেশের অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে একটা গণতন্ত্রহীন অবস্থা বিরাজ করছে। যখন আমাদের বুকের উপরে একটা বেআইনি জোর জবরদখলকারী সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। শুধু তাই নয়, ক্ষমতা দখল করার পরে তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধবংস করেছে, প্রত্যেকটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধবংস করেছে এবং বাংলাদেশের জনগণকে একটা অন্ধকার গহ্বরের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
বিএনপির এ শীর্ষ নেতা বলেন, তিন বছর আগে ১৮ কোটি মানুষের নয়নের মণি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদের সঙ্গে ইফতার করেছেন। আজকে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতনে রোষানলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে তাকে অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। আমাদের ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ৬শর অধিক নেতাকর্মীকে গুম করে ফেলা হয়েছে, সহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে নেতাকর্মীসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
ইফতার মাহফিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, আহমেদ আজম খান, অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, জয়নুল আবদিন ফারুক, আমান উল্লাহ আমান, অধ্যাপক শাহিদা রফিক, তাহসিনা রশদীর লুনা, শ্যামা ওবায়েদ, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আফরোজা আব্বাস, সদ্য কারামুক্ত প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মন্টু, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণ-অধিকার পরিষদের রেজা কিবরিয়াসহ ২০ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ, কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা ছিলেন। ইফতারপূর্ব অনুষ্ঠানে দলের গুম হওয়া নেতৃবৃন্দের পরিবারের সদস্যরাও বক্তব্য রাখেন।
ক্যাপশন
শুক্রবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : এনটিভি