মন্দিরে হামলার ইন্ধনদাতাদের নাম জেনেছি, সবাইকে জানাব : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, দেশে সুপরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছে। পূজামণ্ডপে কে বা কারা কোরআন শরিফ রেখে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অস্থিতিশীল করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। শিগগির এসব সহিংসতায় ইন্ধনদাতাদের নাম প্রকাশ করা হবে।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘বিএসআরএফ সংলাপে’ অংশ নিয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি এ সময় সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখাকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ১০টি মামলা হয়েছে। রংপুর ও নোয়াখালীর ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরা ইন্ধনদাতাদের নাম জানিয়েছে। আমরা শতভাগ নিশ্চিত হয়ে তাদের নাম আপনাদের সামনে প্রকাশ করব। সেখানে বিএনপি-জামায়াত আছে কি না সেটা এখনই বলতে চাচ্ছি না। আমরা নিশ্চিত হয়েই আপনাদের জানাতে চাই।’
‘ভিডিও ফুটেজ দেখে যারা যারা এই অপকর্মটি করেছেন তাদের আমরা শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করেছি। তাদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে নেওয়া হচ্ছে। আমরা সন্দেহ করছি, প্রথম থেকেই বলে আসছি এটা একটা চক্রান্ত। একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির জন্য আমাদের কয়েকজন চিহ্নিত নেতাকর্মী এগুলোতে উৎসাহ দিয়েছেন এবং ব্যবস্থা নিয়েছেন। আমি তাদের নাম আপনাদের জানাব। আর দু-একদিনের মধ্যেই। ১৬৪ ধারার জবানবন্দি শেষ হলেই। আমরা জেনে গিয়েছি।’
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল আরও বলেন, ‘দেশে ধর্ম নিয়ে কোনো বৈষম্য হবে না। হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাই যার যার ধর্ম পালন করে আসছেন। কিন্তু, ইদানিং পূজামণ্ডপে সহিংসতা হচ্ছে। আমরা শুরুতেই ধরে নিয়েছিলাম, কোরআন শরিফ রেখে দিয়েছে। আসলে এটি কোনো এক জায়গা থেকে এসেছে। আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম, আমাদের পুলিশের সব পর্যায়ের টিম সেখানে পাঠিয়েছিলাম, যাতে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন হয়। আমরা দেখলাম, একটা মসজিদের পাশে একটা পুকুর ছিল, পুকুরে মাছ চাষ হতো, পুকুরের মাছচাষি মসজিদের বারান্দায় একটা ক্যামেরা বসিয়েছে, যেখানে পরিষ্কার দেখা গেছে, কেউ মসজিদ থেকে কোরআন নিয়ে হনুমানের গদার স্থানে কোরআন রেখে গদা নিয়ে বেরিয়ে চলে এলেন।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ধারণা ছিল, জুম্মার নামাজের পর অসুবিধা হতে পারে। আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বলেছিলাম, তার আগেই প্রতিমা বিসর্জন দেবেন এবং তারা তা করেছেন। আমাদের নামাজও ঠিকভাবে শেষ হলো। বর্তমানে সারা দেশের পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক রয়েছে। সর্বত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে।’
আজকের সংলাপে বিএসআরএফের সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক। সংলাপে সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক মেহদী আজাদ মাসুম, সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন, অর্থ সম্পাদক মো. শফিইল্লাহ সুমন, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম, কার্যনির্বাহী সদস্য ইসমাইল হোসাইন রাসেল, শাহজাহান মোল্লা, হাসিফ মাহমুদ শাহ, শাহাদাত হোসেন রাকিব প্রমুখ অংশ নেন।