মাঝ নদীতে লঞ্চ থেকে মেঘনায় ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ যুবক
বরিশাল থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে লঞ্চ থেকে মেঘনায় ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হয়েছে নগরীর কালিবাড়ি রোডের এক যুবক। গত শুক্রবার (৭ এপ্রিল) শুভরাজ-৯ লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হয় বলে যুবকের পরিবার জানিয়েছে।
নিখোঁজ ওই যুবকের নাম শেখ রেফাত মাহমুদ সাধ (২৭)। সে নগরীর কালিবাড়ি রোডের ফ্লোরা ভিউর বাসিন্দা ঠিকাদার শেখ আসলাম মাহমুদের ছেলে। লঞ্চের সিসিটিভির ফুটেজ থেকে দেখা গেছে, ওইদিন রাত দেড়টার দিকে লঞ্চ থেকে নদীতে লাফিয়ে পড়ে সাধ।
সাধের বাবা শেখ আসলাম মাহমুদ বলেন, ব্রজমোহন কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছে সাধ। আবুল খায়ের গ্রুপ অব কোম্পানিতে তার নিয়োগ হয়েছে। গত শনিবার সেখানে যোগদানের কথা ছিল। চাকরিতে যোগদান করতে শুক্রবার বরিশাল থেকে শুভরাজ-৯ লঞ্চে ঢাকা রওনা হয়।
শেখ আসলাম মাহমুদ বলেন, আমার ছেলে বলে বলছি না সাধ খুব ভাল ছেলে ছিল। নম্র, ভদ্র ও ধার্মিক ছিল। সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তো ও রোজা রাখতো। তার মধ্যে কখনো অস্বাভাবিকতা দেখিনি। যাওয়ার সময় আমার ও তার মায়ের কাছ থেকে দোয়া নিয়েছে। তার হাতে ও মায়ের কপালে চুমু দিয়েছে। যাওয়ার সময় আরও বলেছে, ঢাকা গিয়ে টাকার প্রয়োজন হলে পাঠিয়ে দিও। আমিও তাকে বলেছি, তুমি জানালে পাঠিয়ে দেব। কিন্তু কেন, কি হলো আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।
ভাইয়ের সন্ধানে মেঘনা নদীতে স্পিড বোট নিয়ে ঘুরছে ছোট ভাই শেখ রাফসান মাহমুদ সংগ্রাম। নদীর বিভিন্ন স্থানে খোঁজা হচ্ছে। নদীর তীরবর্তী মানুষদের কাছে নিখোঁজ ভাইয়ের সন্ধান চেয়েছে সংগ্রাম।
সিসিটিভি ফুটেজ থেকে দেখা গেছে, শুক্রবার দিনগত রাত ১টা ১৬ মিনিটের দিকে লঞ্চের দ্বিতীয়তলার কেবিনের পাশে রেলিং ধরে নদীর দিকে তাকিয়ে রয়েছে সাধ। লঞ্চ থেকে নিচে তাকিয়ে দেখছে। রাত ১টা ৩৩ মিনিটে রেলিংয়ের উপর উঠে ঝাঁপ দিতে গিয়ে থেমে যায়। এক পা রেলিংয়ের বাইরে দিয়ে কিছু সময় দাঁড়িয়ে ছিল। পাশে আরও দুজন যাত্রী থাকলেও তারা বিষয়টি খেয়াল করেননি। মিনিট খানেক সময় দাঁড়িয়ে থাকার পর নদীতে লাফ দেয়। তার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় শেখ আসলাম মাহমুদ সাধারণ ডায়েরি জিডি করেছেন।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, আমিও ভিডিওটি দেখেছি। জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা যে স্থান থেকে ঝাঁপ দিয়েছে, সেই স্থান চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন। এছাড়াও সাধের সন্ধান পেতে প্রত্যেকটি থানায় বার্তা দেওয়া হয়েছে।