সাত খুনের আসামিকে কে ইন্ডিয়া যেতে বলেছেন, তা দেশবাসী জানে : গিয়াস উদ্দিন
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে সাত খুন হয়েছে। সাত খুনের প্রধান আসামি যে, তাকে টেলিফোনে বাংলাদেশ ছেড়ে ইন্ডিয়া যেতে কে বলেছেন, সেই টেলিফোন আলাপ দেশবাসী সবাই শুনেছেন। কারা হত্যা করিয়েছে এবং কারা হত্যাকারীদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, এ কথাও কিন্তু সবাই জানে।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আজ মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সকালে হীরাঝিল জিআর কনভেনশন সেন্টারে ২২ বছর পর সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানকে উদ্দেশ্য করে মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন এসব কথা বলেন।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সাড়ে চৌদ্দ বছরে দুটি ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছে। দেশ এখন একটি ক্রান্তিলগ্ন অতিক্রম করছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা বিপন্ন। হত্যা, গুম, নির্যাতন, অত্যাচার ও নিপীড়নের মধ্য দিয়ে বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মী গৃহহারা জেলহাজতে, মামলা হামলায় জড়িত।
বিএনপির সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশের সাধারণ মানুষ দিশেহারা। এই সরকার সাধারণ মানুষের কথা ভাবে না। শুধু ভাবে ব্যক্তি স্বার্থের কথা। কীভাবে দেশের সম্পদ লুটপাট করবে, কীভাবে দেশের অর্থ-সম্পদ বিদেশে পাচার করবে, এই চিন্তায় তারা বিভোর থাকে। যার কারণে দেশের মানুষ আজ নিদারুণ কষ্টের মধ্যে দিন যাপন করছে। এই সরকার গণতন্ত্রকে হত্যার পর নতুন নীলনকশা তৈরি করছে সামনের নির্বাচন নিয়ে। এই নির্বাচনে যাতে ভোটাররা ভোট প্রয়োগ করতে না পারে সেজন্য ভোট ডাকাতি করে আরেকটি নির্বাচন করে নিজেদেরকে ক্ষমতায় রাখতে চায়।’
স্থানীয় সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানকে উদ্দেশ্য করে গিয়াস উদ্দিন আরও বলেন, ‘অনেক খুনের সাথে না কি আমি রয়েছি। আমাকে খুনিও বলতে উনি কুণ্ঠা বোধ করেন না। নারায়ণগঞ্জ জেলার মধ্যে উনি খুঁজে পেলেন সবচাইতে জঘন্য ব্যক্তি সবচাইতে বড় অপরাধী ব্যক্তি আমি আর আমার সন্তানকে। আমি প্রশ্ন করতে চাই, ত্বকীকে কে হত্যা করেছিল। ত্বকী হত্যার তদন্তের দায়িত্ব র্যাবের ওপর ছিল। র্যাব তদন্ত করে চার্জশিট তৈরি করেছে। সরকারের কাছে সাবমিট করেছে। আদালতে সাবমিট করার আগেই সরকারকে দিয়ে এটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ত্বকীসহ অনেক হত্যা গুম নারায়ণগঞ্জে হয়েছে। অনেক টর্চারসেলের খবর নারায়ণগঞ্জের মানুষ জানে। সেখানে ব্যবসায়ীদের নিয়ে পেটানো হয়েছে। টাকা-পয়সা নেওয়া হয়েছে। সেখানে অনেককে হত্যা করা হয়েছে, একটারও বিচার হয়নি। নারায়ণগঞ্জের মানুষ স্পষ্ট জানে কারা হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। এখন যদি র্যাবের চার্জশিট আদালতে দেওয়া হয়, তাহলে ধরা খেয়ে যাবেন।’
গিয়াসউদ্দিন আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জে সাত খুন হয়েছে। সাত খুনের প্রধান আসামি যে, তাকে টেলিফোনে বাংলাদেশ ছেড়ে ইন্ডিয়া যেতে কে বলেছেন, সেই টেলিফোন আলাপ দেশবাসী সবাই শুনেছেন। কারা হত্যা করিয়েছে ও কারা হত্যাকারীদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, এ কথা সবাই জানে। এখন ক্ষমতায় আছেন অনেক কিছু বলছেন, খেই হারিয়ে ফেলছেন। আপনাদের সন্তানরাও কোথায় কি চাঁদাবাজি করে, কোথায় শিল্পপতিদের জিম্মি করে অর্থ সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাঠান, সবকিছু কিন্তু মানুষ জানে। ডিস ব্যবসা, ইন্টারনেট ব্যবসা, রাস্তায় টেম্পু, সিএনজি ও প্রতিদিন অটোরিকশাগুলা থেকে কারা চাঁদা নেয়, দেশের সবাই কিন্তু জানে এবং ওই চাঁদার মূল ভাগ কোন পরিবারের সদস্যরা পায় সেটাও কিন্তু সবাই জানে। সবাই সাহস করে বলতে পারে না।