‘সাহসী কন্যার ফোন বেচে মদ পান করেছে ছিনতাইকারীরা’
জবির সেই ‘সাহসী কন্যা’ পারিসার ফোন ছিনতাইকারী ফোন বিক্রি করে মদ পান করেছেন বলে জানিয়েছেন, তেজগাঁও বিভাগের পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার রুবাইয়াত জামান। আজ বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
রুবাইয়াত বলেন, ‘ঢাকার কারওয়ান বাজারে বাসের ভেতর থেকে ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনটি বিক্রি করে দুই ছিনতাইকারী মদ কিনে খেয়েছিল বলে জানিয়েছে।’ ওই ফোন চার হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছিল বলেও জানান তিনি।
এর আগে, গত ২১ জুলাই সন্ধ্যায় রাজধানীর মিরপুর থেকে তানজিল পরিবহণ নামে একটি যাত্রীবাহী বাসে সদরঘাটে যাচ্ছিলেন পারিশা। বাস কারওয়ান বাজারে এলে পারিশার মোবাইলফোন ছিনতাই হয়। দ্রুত বাস থেকে নেমে ছিনতাইকারীকে ধরার চেষ্টা করেন তিনি। এ সময় দুই ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলেন তিনি। যদিও তাদের মধ্যে কেউ পারিশার মোবাইলফোন ছিনতাইকারী ছিলেন না। ওই ছিনতাইকারীদের ধরার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
এরপর নিজের মোবাইলফোন উদ্ধার ও ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করতে নিজে বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলা করেন পারিশা।
রুবাইয়াত বলেন, ‘গত ২১ জুলাই রাজধানীর কারওয়ানবাজার এলাকা থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী পারিশা আকতারের মোবাইলটি বাস থেকে ছিনিয়ে নেয় রিপন ওরফে আকাশ। তাকে ধাওয়া করলে মোবাইলটি আরেক ছিনতাইকারীর কাছে হাতবদল করে পালিয়ে যায় রিপন।’
রুবাইয়াত জামান আরও বলেন, ‘রিপন মোবাইলটি ছিনিয়ে দৌড় দেয় কিন্তু তার পিছু পিছু অন্য এক যুবক দ্রুত হাঁটতে শুরু করে। ওই যুবকের সন্দেহজনক গতিবিধির কারণে তার সম্পর্কে পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং তাকে ২৪ জুলাই কারওয়ান বাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার নাম রাশেদুল ইসলাম (১৭)।’
এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘রাশেদ প্রথমে ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করলেও জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে স্বীকার করে তারা দুজন মিলে এ কাজটি করেছে। ওই তথ্য পাওয়ার পর আদালতে আবেদন করে আকাশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। আকাশ তখন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। জিজ্ঞাসাবাদে রাশেদ ও রিপন বলে, তারা ৪ হাজার টাকায় মোবাইলটি বিক্রি করে দেয়। রিপন নেয় এক হাজার টাকা আর রাশেদ নেয় ৫০০ টাকা। বাকি টাকায় তারা মদ কিনে খায়।’
রুবাইয়াত বলেন, ‘আকাশ ও তার কিশোর সহযোগীর দেওয়ার তথ্যে মঙ্গলবার কারওয়ান বাজারে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় শফিককে, যার কাছে বিক্রি করা হয়েছিল ওই ছাত্রীর ফোন। অভিযানে মোবাইলটিও উদ্ধার করা হয়।’
এদিকে, আজ সংবাদ সম্মেলনে পারিসা হাজির ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি আসলে অনেক খুশি। পুলিশ প্রতিনিয়ত আমাকে আপডেট জানিয়েছে। মোবাইলটা খুব দরকার ছিল। তাই ছিনিয়ে নেওয়ার পর ঝুঁকি নিয়ে ছিনতাইকারীকে তাড়া করি। ছিনতাইকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য আমার যেখানে যাওয়া প্রয়োজন আমি সেখানে যাব।’

নিজস্ব প্রতিবেদক